দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: অনলাইন প্রতারণার ক্ষেত্রে বেড়েছে মানুষের সচেতনতা, দাবি পুলিশের। শুধু তাই নয় , পুলিশের সচেতনতামূলক প্রচারের জন্যই প্রতারিত সাধারণ মানুষ বসে না থেকে সাইবার ক্রাইম থানার সাহায্য নিচ্ছে। যারফলে চলতি বছর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানেই অনলাইন প্রতারণা চক্রের হাত থেকে ৭ লক্ষ টাকারও বেশি উদ্ধার করেছে মালদা সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ । গত বছর ১৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল পুলিশ । কিন্তু এবছর দুই মাসের ব্যবধানেই ৭ লক্ষ টাকার ওপরে উদ্ধার করে প্রকৃত উপভোক্তাদের কাছে ফেরাতে পেরেছে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকাই সাধারণ মানুষ অথবা শাসক দলই নয়, বিরোধীদল বিজেপিও ভূয়সী প্রশংসা করেছে। উল্লেখ্য, মালদা জেলার এক পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। অপরদিকেই রয়েছে দেশের দুই রাজ্য বিহার এবং ঝাড়খন্ড। উত্তরবঙ্গের করিডর বলা হয় মালদাকে। সুতরাং সীমান্তে ঘেরা মালদা জেলায় অপরাধচক্র জাল বিছানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে পুলিশি তৎপরতার সাথে অপরাধ দমন অনেকটাই ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। বিগত দিনে অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ প্রতারিতদের টাকা উদ্ধারের পর ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
মালদার ইংরেজবাজারের সুভাষপল্লীর বাসিন্দা তথা বিজেপি নেত্রী মৌসুমী মিত্র বলেন , ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দফায় দফায় মোট ৩৮ হাজার টাকা আমার অনলাইন প্রতারণা চক্রের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে খোয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে ছিলাম। সাইবার ক্রাইম থানার সাহায্য নি। পুলিশ যেভাবে তৎপরতার সাথে কাজ করেছে, তার প্রশংসা করছি। খোয়া যাওয়া টাকা পুলিশ উদ্ধার করে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছে। জেলা পুলিশের প্রচারের জন্যই আমরা সচেতন হয়েছি। ফলে অনলাইন প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়লেও সঙ্গে সঙ্গে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। তাই সাধারণ মানুষকে বলি এরকম ভাবে প্রতারিত হলে পুলিশের সাহায্য নিন। চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুরের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা গোলাম মর্তুজা জানিয়েছেন, আমার বৃদ্ধ বাবাকে ফোন করে এই জালিয়াতি চক্র একাউন্ট নম্বর নিয়ে ৪২ হাজার টাকা হাপিস করেছিল। গত ,১৫ দিন আগে এই ঘটনা ঘটলেও সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানায়। তারপরে পুলিশ সেই টাকা উদ্ধার করে দিয়েছে। পুলিশের এই কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তাই বসে না থেকে প্রতারিত হলেই পুলিশের সাহায্য নিন। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, সাইবার অপরাধ দমনে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি থানাতেও একজন করে টেকনিক্যাল কর্মী রাখা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে অনলাইন প্রতারণা চক্রের ধরার জন্য অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বয়স্ক মানুষেরাই হয়তো এটিএম কার্ড নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে ফেলছেন। এই ধরনের ভুল করবেন না। সেই জন্য বিভিন্ন থানা থেকে সাইবার অপরাধ দমনে বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। স্কুল পড়ুয়াদের সাহায্য নিয়েও এই প্রচার চালানো হচ্ছে। অনলাইন প্রতারণা চক্রের দমনে বিশেষভাবে কাজ করছে জেলা পুলিশ। মানুষ আগের থেকে অনেকটাই সচেতন হয়েছে। তাই কোনো ক্ষেত্রে যদি কেউ প্রতারিত হয়ে থাকেন, দ্রুত পুলিশের সহযোগিতা নিন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct