আপনজন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার কৃষ্ণনগরে সভা করেন। এদিন কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্র আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে আমন্ত্রণ উপেক্ষা করেন। বরং কৃষ্ণনগরে বিজয় সংকল্প যাত্রার দ্বিতীয় দিনে বাংলায় ক্ষমতাসীন তৃণমূলের উপর তোলাবাজ (তোলাবাজ) ঠোঁটে আক্রমণ তীক্ষ্ণ করে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৪২টি আসন চান তিনি।এর আগে ২০১৯ সালে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ১৮টিতে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছিল ২২টি আসনে। কংগ্রেস ২টি আসন পেলেও বাম দল কোনো আসনে জয় পায়নি।এবারের আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছর বলেছিলেন, রাজ্যের ৩৫টি আসনে জিততে চায় বিজেপি। আর আজ প্রধানমন্ত্রী মোদি একধাপ এগিয়ে রাজ্যের ৪২টি আসনেই জয়ের লক্ষ্য বেঁধে দিলেন।নরেন্দ্র মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ৪২ আসনের সব কটিতে জয় তাঁদের লক্ষ্য। সরাসরি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সমালোচনা না করে তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মানে দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতকতা, ভ্রষ্টাচার, অত্যাচার ও পরিবারতন্ত্র। এই ভ্রষ্টাচারের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে হবে।একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পর মোদি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ‘তুমি, আমি এবং দুর্নীতি আর দুর্নীতি।’এদিন সকালে মোদি যখন কলকাতার রাজভবনে ছিলেন, তখন বহিষ্কৃত কৃষ্ণনগর সাংসদ তাঁর প্রাক্তন নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরে করিমপুরে ছিলেন।শনিবার সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মহুয়া বলেন,
করিমপুরে রমেন ঘোষের দোকানে দলপুরি দিয়ে সকাল শুরু করলাম। আমার প্রিয়। প্রধানমন্ত্রী মোদিজি, আসুন, কিছু খেয়ে নিন। তবে, এদিন মোদি লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত সদস্য মহুয়ার কোনও নাম নেননি। অবশ্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের ভাষণে মহুয়াকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন। এদিন মোদি তার ভাষণে শুধু মহুয়া নয়, দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেননি। যদিও তিনি তৃণশূলের চরম সমালোচনা করেন। মোদির দৃষ্টি ছিল কোনও ব্যক্তির দিকে নয়, বাংলার শাসক দল এবং সরকারের নীতির দিকে। তবে, সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হল মতুয়াদের খাসতালুক বলে খ্যাত কৃষ্ণনগরে দাঁড়িয়ে একবারও মতুয়াদের নাম নেননি। অমিত শাহ জোর গলায় শীঘ্রই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ চালু করার কথা বললেও মোদির মুেখ মতুয়াদের নিয়ে টুঁ শব্দটিও শোনা যায়নি। যদিও মোদি সন্দেশখালি নিয়ে সরব হন। নরেন্দ্র মোদি বলেন, মা-মাটি-মানুষের কথা বলে নারীদের ভোট নিয়েছে তৃণমূল, কিন্তু উন্নয়ন করেনি। সন্দেশখালীতে নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে। নারীদের প্রতিবাদের কথা শোনেনি। রাজ্য সরকারও চায়নি তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করতে। মানুষের আন্দোলন ও দাবির মুখে রাজ্য পুলিশ সন্দেশখালীর ত্রাস তৃণমূলের নেতা শেখ শাহজাহানকে ৫৫ দিন পলাতক থাকার পর গ্রেফতার করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, তৃণমূল তাদের শাসনামলে এই বাংলার মানুষকে নিরাশ করেছে। এখন এই বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকার কুশাসনে কাঁপছে। রেশন বণ্টনে দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে মোদি আরও বলেন, টিএমসি সরকার এই বাংলার ১০০ দিনের কাজে ২৫ লাখ ভুয়া জব কার্ড তৈরি করে অর্থ লুটপাট করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলার স্কিমকে স্কাম বানিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct