নিজস্ব প্রতিবেদক, বনগাঁ, আপনজন: আমগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিবাদ । আর তার জেরেই এক গৃহবধূকে প্রকাশ্যে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করল বধূর দেওর, ননদ এবং শাশুড়ি । ঘটনার ঠিক এক বছরের মাথায় ৩ অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দিল আদালত । ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী । উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার হাটখোলা গ্রাম । আর এই গ্রামেই বসবাস ছিল বছর ৪৫ বয়সের ফুলমালা কীর্তনীয়ার । স্বামী সমীর কীর্তনীয়া এবং ছেলে সুমন কাজের সূত্রে অন্য রাজ্যে থাকতেনন৷ ফুলমালার দেওর অমর কীর্তনীয়ার সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদ ঘটেছিল ফুলমালাদের সঙ্গে । দুই পরিবারের জমির সীমানার মাঝে একটি আমগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে যে শেষপর্যন্ত একটা জীবন এইভাবে চলে যাবে, তা কোনওভাবেই ভাবতে পারেন নি ফুলমালার পরিবারের সদস্যরা । এই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় দাস জানান, গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯ টা নাগাদ আমগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ফুলমালার সঙ্গে তাঁর দেওর অমর কীর্তনীয়ার বিবাদ বাধলে সেখানে হাজির হয় ফুলমালার ননদ রাধিকা সরকার কীর্তনীয়া এবং শাশুড়ি সারথী কীর্তনীয়া । এরপর তিনজন মিলে নৃশংসভাবে একটি কুড়ুল দিয়ে ফুলমালাকে একের পর এক কোপ দিয়ে প্রকাশ্যে খুন করে। ঘটনার পর প্রতিবেশীরা এসে তিনজনকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন । এই ঘটনায় ফুলমালার দেওর, ননদ এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ফুলমালার ভাই কমল হাওলাদার । ধৃত ৩ জনের মধ্যে কিছুদিন পর হাইকোর্ট থেকে ননদ রাধিকা জামিনে মুক্তি পেলেও দেওর অমর এবং শাশুড়ি সারথীর বনগাঁর ২ নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে কাষ্টডি ট্রায়াল হয় । মোট ২৫ জন সাক্ষী এবং অন্যান্য তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে ২৩ ফেব্রুয়ারী অভিযুক্ত ৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক ৷ অবশেষে খুনের ঘটনার ঠিক এক বছরের মাথায় মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক পরেশচন্দ্র কর্মকার দোষী ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct