নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝাড়গ্রাম, আপনজন: বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক সভা থেকে পরিষেবা প্রদান করার পাশাপাশি আদিবাসী গুরুজনদের সংবর্ধনা দেওয়ার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন, সারি ও সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দিতে দিল্লী কে বার বার বলেছি ,কিন্তু কেন্দ্র এখনো সারি ও সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দেয়নি, যদি সারি ও সারনা ধর্মকে কেন্দ্র স্বীকৃতি না দেয় তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করা হবে। নির্বাচন এলে দিল্লির বাবুরা এসে বড় বড় কথা বলে, কিন্তু মানুষের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি। আমরা বিনা পয়সায় চাল দিই, আর সেই চাল রান্না হয় এক হাজার টাকার বেশি দামের গ্যাসে। গ্যাস, কেরোসিনের দাম বাড়ছে আগামী দিনে আরও গ্যাসের দাম বাড়াবে কেন্দ্র। বাংলার মানুষকে রান্না করতে হবে ঘুঁটে ও কাঠের জ্বালানি দিয়ে। ওরা বাংলাকে ও আদিবাসীকে ভালোবাসেনি। কেবল বাংলার ক্ষতি করতে ব্যস্ত। আমি মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। নির্বাচন এলে কা কা নিয়ে আসরে নেমে পড়ে। যদি নাগরিকত্ব না থাকলে কি করে তাদের ভোটার লিস্টে নাম উঠল, কি করে তারা আধার কার্ড করল, কি করে ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে? শুধু নির্বাচন এলেই এদের কা কা নিয়ে আসরে নেমে পড়া, নাম না করে এভাবেই বিজেপি কে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরো বলেন, ওদের ছলনা নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্প করা। যেখানে মানুষকে আটকে রাখা। বাংলা থেকে একটা মানুষকে তাড়াতে দেব না। গত দু’বছর কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া টাকা দেয়নি। যার ফলে শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েছিল। রাজ্য সরকার বাংলার শ্রমিকদের সেই টাকা মিটিয়ে দিয়েছে। গরিব মানুষ বাড়ি থেকে বঞ্চিত যাতে না হয় তার জন্য কেন্দ্র সরকারকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিনি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এরপর মে মাস থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন ঝাড়গ্রামের মাটি পর্যটনের মাটি, তাই আগামীদিনের ঝাড়গ্রামের পর্যটনকে আরো উন্নত ধরনের গড়ে তোলার জন্য রাজ্যের পর্যটন দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বিডিওদের বলেন, এলাকায় যান ল্যাম্পসের মাধ্যমে এলাকায় গিয়ে কাজ করবেন। মানুষ যাতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে নজর রাখবেন। মমতা আরও বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য যে সকল ব্যবসায়ীদের দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদেরকে ২০০০ টাকা করে দেওয়া হবে এবং তাদের ব্যবসা করার জন্য দোকানের ব্যবস্থা করা হবে। সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলে অলচিকি হরফের কিছু শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। লালগড়, বেলপাহাড়ি সহ গোটা জঙ্গলমহলে যে রক্ত ঝরতো সেই রক্ত এখন আর ঝরে না। মানুষ শান্তিতে রয়েছে এখন শুধু উন্নয়নের পালা। মুখ্যমন্ত্রী ধর্ম পালন প্রসঙ্গে বলেন, কোনও ধর্মে কেউ হস্তক্ষেপ করবে না। যে যার নিজেদের ধর্ম পালন করবে। তাই জঙ্গলমহল ভালো থাকুক উন্নয়নের মাধ্যমে এটাই আমি চাই। সেই সঙ্গে তিনি আদিবাসী ভাষায় জঙ্গলমহলকে ভালবাসি জঙ্গলমহলকে ভালো রাখবেন বলে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন। এরপর জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সভা শেষ হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct