আপনজন ডেস্ক: রাজ্য সভার ভোটে ব্যাপকভাবে ক্রস ভোটিং হল। তার ফলে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচনে এবার এক নতুন ঘটনার সূত্রপাত হল। হিমাচল প্রদশে থেকে শুরু করে কর্নাটক কিংবা উত্তরপ্রদেশ, সর্বত্রই ক্রস ভোটিং হয়েছে। হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের শাসন থাকলেও সেখানকার বেশ কয়েকজন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙভি পরাজিত হয়েছেন। আবার কর্নাটকে বিজেপি বিধায়ক ক্রস ভোটিং দিয়েছেন কংগ্রেসকে। তবে, কর্নাটকে রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের তিন প্রার্থীই জয়ী হয়েছেন। একজন বিজেপি প্রার্থী এবং একজন জেডিএস প্রার্থী জিতেছেন। একজন বিজেপি বিধায়কও ক্রস ভোট দিয়েছেন এবং একজন ভোটদানে বিরত ছিলেন। নির্দল বিধায়করা কংগ্রেসের সমর্থনে ভোট দিলেও অজয় মাকেন, নাসির হুসেন এবং জিসি চন্দ্রশেখর কংগ্রেস থেকে জয়ী হয়েছেন। সেখানে একজন বিজেপির নারায়ণ ভান্ডে এবং একজন জেডিএসের কপিন্দর রেড্ডি জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে ৪৭ ভোট। সেখানে কংগ্রেস ১৩৯ ভোট এবং জেডিএস পেয়েছে ৩৬ ভোট। কর্নাটকে, নির্দল বিধায়ক জনার্ধন রেড্ডি, লথা মল্লিকারঞ্জন, পুট্টস্বামী গৌড়া এবং দর্শন পাটনাইয়া কংগ্রেস প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোটের আগেও ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। কংগ্রেস দল তার সমস্ত বিধায়ককে ব্যক্তিগত রিসর্টে স্থানান্তরিত করেছে।
কর্নাটক থেকে পাঁচজন প্রার্থী ছিলেন, যার মধ্যে কংগ্রেস থেকে অজয় মাকেন, সৈয়দ নাসির হুসেন এবং জিসি চন্দ্রশেখর, বিজেপির নারায়ণ ভান্ডে এবং জেডিএস থেকে কপিন্দর রেড্ডি। কর্নাটকে, রাজ্যসভায় নির্বাচিত হতে একজন প্রার্থীর ৪৫টি ভোট প্রয়োজন ছিল। নির্বাচনে কংগ্রেসের অজয় মাকেন ৪৭ ভোট, নাসির হুসেন ৪৭ ভোট এবং জিসি চন্দ্রশেখর ৪৫ ভোট পান। সেখানে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৪৭ ভোট এবং জেডিএস প্রার্থী পেয়েছেন ৩৬ ভোট।
উত্তরপ্রদেশে ১০টি রাজ্যসভার আসনের মধ্যে বিজেপি আটটিতে জিতেছে। আর সমাজবাদী পার্টি দুটিতে জিতেছে। তবে, সাতজন সমাজবাদি পার্টি, একজস এসবিএসপি ও একজন বহুজনসমাজপার্টির বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।
রাজ্যসভা নির্বাচন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলমান অস্থিরতার মধ্যে মঙ্গলবার তিন টি রাজ্যের ১৫ টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই তিনটি রাজ্য হল উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং কর্ণাটক। ইউপির ১০টি, কর্নাটকের ৪টি এবং হিমাচল প্রদেশের একটি আসনে ভোট হয়েছে। ইউপিতে বড় ধাক্কা পেলেন এসপি। এখানে ৭ জন এসপি বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, ১৫ টি রাজ্যে ৫৬টি রাজ্যসভার আসন খালি রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি রাজ্যের ৪১টি রাজ্যসভার আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি আসনগুলোতে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে, যার ফলাফল শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।
হিমাচল প্রদেশে রাজ্যসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন। ভোট গণনায় দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল সমান এবং উভয় প্রার্থীই পেয়েছেন ৩৪টি ভোট। এরপর টস করে বিজয়ী প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়। ৬জন কংগ্রেস এবং তিনজন নির্দল বিধায়ক ক্রস-ভোট করেছিলেন যার কারণে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস সরকারেও রাজ্যসভা নির্বাচনে জিততে পারেনি। কংগ্রেস তার প্রার্থী হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভিকে প্রার্থী করেছিল, আর বিজেপি ৪০বছর ধরে কংগ্রেসে থাকা হর্ষ মহাজনকে প্রার্থী করেছিল। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হর্ষ মহাজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে হিমাচল শাসন করছে। বিধানসভায় ৪০ কংগ্রেস, ২৫ বিজেপি এবং তিনজন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct