পশ্চিমবাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শুধু এইবাংলা নয় বিশ্বেরযেখানে যেখানে বাঙালি হিন্দু মানুষ আছেন তাদের প্রায় সকলেই পুজো এলেই মেতে ওঠেন সার্বজনীন উৎসব হিসেবে। সেখানে শুধু হয় দূরে নন, মুসলিমরাও অনেকে অংশ নেন। দুর্গাপূজা হয়ে ওঠে সম্প্রীতির উৎসব, সার্বজনীন শারদীয়া উৎসব।
এখন পুজোর আনন্দে মেতে জতেছে বাংলা। ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুরাও শামিল শারদীয়া উৎসবে। দেবী দুর্গা অর্থাৎ 'মা আসছেন' শব্দটিতেই বাঙালির সমস্ত আবেগ যেন পরতে পরতে সাজানো রয়েছে। বীরেন্দ্রকৃষ্ণের কণ্ঠস্বরে স্তোত্র পাঠের অপেক্ষার পরই যেন যাবতীয় অপেক্ষা শেষ হয়, ঢাকেল বোলে ২০১৯ সালের দুর্গা পুজোয় মাতছে বাঙালি। এবার পুজো বেশ কিছুটা আগেই। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের আয়োজন শুরু হয় ২৮ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার দিন থেকে।
অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে মর্ত্যে আসে দেবী দুর্গা। পঞ্চমীর মধ্যেই সমস্ত প্যান্ডেলে ঠাকুর দর্শনে জমতে থাকে ভিড়। মহাপঞ্চমী বৃহস্পতিবার। শাস্ত্র মতে মহাষষ্ঠী শুক্রবার। আর মহাসপ্তমী শনিবার । সে দিনই নবপত্রিকা স্নানের মাধ্যমে অর্থাৎ তাদের শাস্ত্র মতেই ঢাকে কাঠি পড়ে যায় পুজোয়। মহাঅষ্টমী রবিবার দিন। এই অষ্টমীর কাজ গুলো দুপুর থেকেই যেন হয়, আর তা শেষ হয় সন্ধিপুজো সময় পর্যন্ত। মহানবমীতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ধর্মীয় নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করে। দশমীতে সব মণ্ডপে থাকে বিষাদের সুর। কারণ, তাদের শুভ বিজয়া দশমীর দিনেই দূর্গাকে বিসর্জনের মধ্য দিয়েই যেন মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসের স্বামী গৃহে ফিরে যায় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। বিদায় বেলায় শত সহস্র ভক্তদের আনন্দ-উল্লাসে আর বিজয়ার অশ্রুতে আকাশ বাতাস কম্পিত হয়ে উঠে। দেবী দুর্গাকে স্বর্গালোকে এমন বিদায় দেওয়ার আয়োজন সত্যিই সনাতন বিশ্বাসীদের বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গভীর আত্তার সঙ্গে মিলিয়েই যেন শঙ্খ ধ্বনি আওয়াজ তুলে এবং ঢাকের তালে তালেই কম্পিত হয় আকাশ বাতাস। তাদের এমন দেবী দূর্গাকে বিদায়ের সুরের সাথেই সঙ্গী সাথীও করেন অসহায় গবীব দুখী মানুষদের। সেখানে ধর্ম, বর্ণ একাকার হয়ে যায়। হিন্দু মুসলিম পরিচয় ব্যতিরেকে শারদীয়া দুর্গাপূজা হয়ে ওঠে সার্বজনীন উৎসব, বাঙালির মহান উৎসব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct