রাত দুপুরের
সিরাজুল ইসলাম ঢালী
শনিবারের রাত দুপুরে মি: ঘোষ ভর্তি হলেন ড্রিম লাইফ নার্সিং হোমে । ডক্টর নীল দত্ত মি: ঘোষকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার বুকে পেটে এসব বিশ্রী অবস্থা কে করলেন ?” জবাবে মি: ঘোষ যা বলেছিলেন, সেটাই আজকের একটা ছোট গল্পই হয়ে উঠল । দারুণ গল্প ! চলুন গল্পটা আপনাদেরকে বলি । মন দিয়ে পড়ুন । আশা করি, ভালো লাগবেই । পাশের ঘরে মাস খানেকের বিয়েওয়ালা মেয়ে ও জামাই । ডিনার শেষে সাধারণ আলাপ আলোচনা ও গল্পের পরে মেয়ে জামাই শুয়ে পড়লেন । উভয়েই কাঁচা মাংস রক্তের আস্বাদনে মশগুল ! তার বর্ণ গন্ধ পাওয়া না গেলেও শক্তপোক্ত শাল ও সেগুন কাঠের মনোরম নক্সী খাট পালঙ্কের উপরে নবদম্পতির আদিম কর্মকাণ্ডের মৃদুমন্দ আওয়াজ মিসেস্ রসবতী ঘোষের কর্ণকুহরে ভেসে আসছিল । অস্বীকার করা যাবে না । ফলে অন্যান্য রাতের মত মিসেস্ ঘোষের চোখে ঘুমও আসছিল না । বরং চোখে মুখে প্রেম প্রেম ভাবের উদয় হতে লাগল । হৃদয়ে অদ্ভুত একটা ভালোবাসা ভালোবাসার অনুভূতি সৃষ্টি হতে লাগল । মি: ঘোষের সঙ্গে ঐ মুহূর্তে একটু আলিঙ্গনাবদ্ধ হওয়ার জন্য মনপ্রাণ যেন পাকাপোক্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করল । মিসেস্ ঘোষ শুয়ে শুয়েই একটু মোলায়েম কন্ঠে বলে উঠলেন, “দিনরাত তোমার কাজ আর কাজ, মানে ঐ যে তোমার বিজনেস্ নিয়েই তো পড়ে থাকো । রাতেও প্রতিদিন খেয়েদেয়ে ঘুমানোর নাম গন্ধ করো না । কি ব্যাপার একটু বলবে ? এসো এখন, পাশে শুয়ে পড়ো তো দেখি ।” মি: ঘোষ স্ত্রীর কথা শেষ না হতেই বলে উঠলেন, “একদম, এক্ষুনি শুয়ে পড়ছি । আজ একটু ক্লান্ত, রাত জেগে লাভ তো হবেই না, বরং ক্ষতিই হবে ।” যথারীতি স্বামী স্ত্রীর পাশে শুয়েই পড়লেন । তারপরে মিসেস্ ঘোষ যৎপরোনাস্তি যৌন ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে মেতে উঠলেন । ক্লান্তি ভুলে বয়স ভুলে মি: ঘোষও স্ত্রীকে তৃপ্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করলেন । কিন্তু বিফল হলেন, দু এক মিনিটেই খেলা শেষ করে স্ত্রীর নিকট পরাজিত হলেন । উপরন্তু স্ত্রী আবেগে উন্মত্ত হয়ে ক্ষোভ বশত: স্বামীর বুকে পেটে দাঁত দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেললেন । রক্তাক্ত হলেন মি: ঘোষ । অসহ্য জ্বালা যন্ত্রণায় মি: ঘোষ অসুস্থ হয়ে অনতিবিলম্বে ঐ রাতে বাড়ির পার্শ্বস্থ ‘ড্রিম লাইফ নার্সিং হোমে’ ভর্তি হলেন...।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct