নিজস্ব প্রতিবেদক, সন্দেশখালি, আপনজন: অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালির বেতমজুর গ্রামে পৌঁছলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। ২৪ ঘন্টা ফেরত না ফেরতই ফের সন্দেশখালিতে পা রাখেন রাজ্য পুলিশের প্রধান। সন্দেশখালি দুই নম্বর ব্লকের এক নম্বর বেরমজুর গ্রামের কাছারি অঞ্চল থেকে শুরু করে একাধিক গ্রামে ঘুরছেন তিনি। শুনছেন সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ। সন্দেশখালিতে বানানো হচ্ছে একাধিক পুলিশ ক্যাম্প। সেখানেই অভিযোগ জানাতে পারবেন নির্যাতিত গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের প্রতি রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজিব কুমারের আবেদন আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যারা আইন-শৃঙ্খলা মানবে না এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ করা ব্যবস্থা নেবে বলে ডিজি রাজীব কুমার জানান। এদিকে সন্দেশখালি ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সন্দেশখালিতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রবেশ করতে দেওয়া হল না বিজেপি মহিলা প্রতিনিধি দলকে ।
ধামাখালিতে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয় রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্রের সহ অন্যান্যদের।
সন্দেশখালিতে যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র।সন্দেশখালির বেরমজুর গ্রামে শেখ শাজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে শুক্রবার দুপুরে ভাঙচুর করে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। কলাগাছি নদীর তীরবর্তী সাধারণ চাষীদের সমস্ত জমি জোর করে ভয় দেখিয়ে দখল নেয় অজিত মাইতি, এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। অন্যদিকে,সন্দেশখালি কাণ্ডের ১৯ দিনের মাথায় দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে সন্দেশখালি পৌঁছালো জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। এর আগে জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা সন্দেশখালি পর্যবেক্ষণে যান। শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা মূলত সন্দেশখালির দুটি ব্লকে যাবেন এবং নির্যাতিত মানুষদের সঙ্গে কথা বলবেন। শুক্রবার তারা দিল্লি ফিরে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে রিপোর্ট জমা দেবেন। দেরিতে হলেও সন্দেশখালির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষের কাছে পৌঁছানো জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের মহিলা থেকে পুরুষ সকলেই তাদের দুর্বিসহ জীবনযাত্রার কথা তুলে ধরেন। শুক্রবার ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালির বেরমজুর এলাকা। কাছারি অঞ্চলের গরিব চাষীদের জমি দখল করে শেখ শাজাহানের ভাই শেখ সিরাজ উদ্দিনের ভেরীর আলাঘরে আগুন দেয় উত্তেজিত গ্রামবাসীরা।গ্রামবাসীদের অভিযোগ তাদের প্রায় ৪০ বিঘা জমি জোর করে দখল করে নেয় শেখ সিরাজউদ্দিন। চাষের জমিতে রাতারাতি সামুদ্রিক নোনা জল ঢুকিয়ে বানানো হয় মেছো ভেরী। প্রতিবাদ করতে গিয়ে জখম হতে হয়েছে অনেককে।
সন্দেশখালি থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো ফল হয় নি।উল্টে প্রতিবাদী গ্রামবাসীদের কপালে জুটেছে অত্যাচার লাঞ্ছনা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা। এডিজি দক্ষিণ বঙ্গ সুপ্রতিম সরকার গ্রামবাসীদের শান্ত হওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন তাদের সমস্ত অভিযোগ পুলিস গুরুত্ব সহকারে দেখবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct