আপনজন ডেস্ক: আগামী ১৩-১৪ মার্চ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তাই নির্বাচন কমিশন এই ঘোষণার পরেই আদর্শ আচরণবিধি (এমসিসি) লাগু হবে।
নির্বাচন কমিশনের দলগুলি এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি রাজ্য সফর করেছে এবং সেখানকার ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করেছে।
নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা বর্তমানে তামিলনাড়ু সফর করছেন, যেখানে তারা রাজ্য প্রশাসনের নির্বাচন সম্পর্কিত প্রস্তুতি সম্পর্কে বিশদ দৃষ্টিভঙ্গি নিচ্ছেন।
গত কয়েক মাস ধরে সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে কমিশন। সিইও-রা সমস্যার জায়গা, ইভিএম চলাচল, তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা, সীমান্তে নজরদারি কঠোর করার তালিকা দিয়েছেন।
আগামী সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশ এবং জম্মু ও কাশ্মীর সফরে যাবে নির্বাচন কমিশন।
সূত্রের খবর, ১১-১২ মার্চ গোটা কমিশন জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়ে ভোটের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্য এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করার জন্য জম্মু ও কাশ্মীর নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন রাজ্য সফরের সময়সূচিতে শেষ স্থানে রয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীর থেকে ফেরার পরেই কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছিল ১০ মার্চ, আর নয় দফার লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছিল ৫ মার্চ।
প্রায় ৯৭ কোটি ভারতীয় এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন। মাসব্যাপী নিবিড় বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন ২০২৪ এর পরে ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হবে।
এদিকে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গে আসছে ৩ মার্চ। এ ব্যাপারে সঙমোধিত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জাীতয় নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন নতুন করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তাতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সচিব রাকেশ কুমার জানিয়েছেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারির চিঠিতে বলা হযেছিল পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দল সফর করবে ৪ থেকে ৬ মার্চ। তা পরিবর্তিত করা হয়েছে। আগামী ৩ থেকে ৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে সফর করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ ৷ এই সফরে পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবে ফুল বেঞ্চ ৷ রাজ্র নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক রাজীব কুমার সহ ১২ জন নির্বাচনী আধিকারিকও আসবেন রাজ্যে ৷ নির্বাচন কমিশনের দল ৩ মার্চ রাজ্যে পা দিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ডঃ আরিজ আফতাব এবং নোডাল অফিসারের সঙ্গে বৈঠকে বসবে ৷ পরদিনও কয়েক দফায় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেবন রাজীব কুমার ও তার সঙ্গে আসা নির্বাচন আধিকারিকরা। সেই বৈঠকেও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবও উপস্থিত থাকবেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে ১৫ মিনিট করে সময় দেওয়া হতে পারে। দুুপুরের পর বিভিন্ন জেলার এসপি, সিপি, ডিভিশনাল কমিশনার এবং আইজি দের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে বৈঠক করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
৫ মার্চ প্রথমে এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিগুলির সঙ্গে তারপর রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপি-র সঙ্গে বৈঠকে বসবে ফুল বেঞ্চ ৷ এর পর রাজ্যে তাদের কির্বাচনী পরিস্থিতিরি অগ্রগতি নিয়ে কথা হবে। সেই অগ্রগিতর কথা সাঙবাদিক বৈঠক করেও জানানো হবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। তারপর তারা দিল্লি রওনা দেবেন।
তবে, নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর মে মাসের আগে লোকসভা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভুয়ো তথ্য চিহ্নিত করতে এবং মুছে ফেলার জন্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য একটি নিবেদিত বিভাগ তৈরি করা হয়েছে।
নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে এবং যদি কোনও দল বা প্রার্থী নিয়ম লঙ্ঘন অব্যাহত রাখে তবে কমিশন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে অ্যাকাউন্ট স্থগিত করতে বা তাদের ব্লক করতে বলার মতো কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
আধিকারিকদের মতে, কমিশন ফ্যাক্ট চেকিং, ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং সংবেদনশীল অঞ্চলগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকেও মনোনিবেশ করবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ৯৬.৮৮ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারবেন। এছাড়া ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী ১ কোটি ৮৫ লাখ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct