মতিয়ার রহমান, কলকাতা, আপনজন: শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা এবং সমাজে ভালো কাজের সুবাদে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে প্রতিবছর বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত বর্ণ পরিচয় স্মৃতিপুরস্কার প্রদত্ত হয়ে থাকে।কাজের মূল্যায়নের নিরিখে এ বছর এই অমূল্য পুরস্কার পেলেন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি ড. আবু তাহের কামরুদ্দিন। পরিতাপের বিষয় হলো কিছুদিন আগে তার মাতৃ বিয়োগ এবং অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য তিনি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাই মহাকুমা শাসক নিজে তার বাড়িতে পৌঁছে যান। তিনি ঘাটাল মহকুমা শাসক শ্রীমান সুমন বিশ্বাসের হাত থেকে এই মহামূল্যবান পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।শিক্ষা এবং শিক্ষাঙ্গনের সাথে আজীবন যুক্ত থেকে তিনি সঞ্চয় করে চলেছেন সুবিশাল অভিজ্ঞতা। দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপনা করেছেন। অধ্যক্ষের পদ সামলেছেন। বাংলার বহু বিশ্ববিদ্যালয় পড়িয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে আসীন থাকাকালীন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব তিনি দক্ষতা এবং সুচারুতার সাথে সম্পন্ন করেছেন। কাজের ফাঁকে যতোটুকু অবকাশ পান হাতে কলম ধরে লেখালেখির কাজ করে যান। এরকম একজন মহান শিক্ষাবিদের
হাতে এই পুরস্কার তুলে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একদিকে যেমন তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মান প্রদান করলেনতেমনি অপরদিকে পিছিয়ে পড়াসংখ্যালঘু মুসলিম সমাজকে এক মর্যাদার আসনে বসালেন।বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত বর্ণপরিচয় স্মৃতি পুরস্কার প্রাপ্তি প্রসঙ্গে ডক্টর আবু তাহের কামর উদ্দিন মহাশয় অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন বরাবরই শিক্ষক সমাজের ভালবাসাকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে কাজ করেছি। নিজেকে প্রতিনিয়ত ভাঙ্গার চেষ্টা করেছি। তবে কাজের জন্য যখন সম্মান স্বীকৃতি পাওয়া যায় তখন খুবই ভালো লাগে। তবে যত স্বীকৃতি পাচ্ছি কাজের প্রতি তত দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে। এই পুরস্কার আমাকে কাজের প্রতি আরো দায়িত্ববান এবং আরো মনোযোগী হয়ে কাজ করতে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ভবিষ্যতে উৎসাহ জুগিয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়কে কেন্দ্র করে এবং বিদ্যাসাগরের নামে যে এই পুরস্কার দেওয়া হল তার একটা আলাদা গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে । আমরা সকলে জানি যে শিশু শিক্ষার জন্য বিদ্যাসাগরের এই অমূল্য গ্রন্থটি আজও শিশু শিক্ষার জন্য পাথেয় এবং অতিব প্রয়োজনীয় । বাজারে শিশু শিক্ষার অনেক বই থাকলেও বিদ্যাসাগরই একমাত্র মানুষ যার কৃতিত্বের চেয়ে তিনি নিজে মহান। সেই কীর্তিমান মানুষের বর্ণ পরিচয় ছিল শিশু শিক্ষার একটি আদর্শ বর্ণমালা শুধু নয় নৈতিক পাঠদানের এক অন্যতম পাঠশালা। অথচ সেই নামেই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে যেখানে নীতি শিক্ষা থেকে চরিত্র গঠন যেখানে শিশু মনোপযোগী বাস্তববাদ এবং প্রয়োজনীয় মনন গড়ে তোলার জন্য তিনি বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেছেন। সেই বইয়ের নামে যখন পুরস্কার তখন তার একটা আলাদা মাত্রা থাকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct