সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: তৃণমূল কংগ্রেসের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল লালগোলা থানার মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের বাউশমারি এলাকা। অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য সুজিত মন্ডল স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বদের নিয়ে বোমাবাজি এবং হামলা চালায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে। সূত্রের খবর, সুজিত মন্ডল পারিবারিকভাবে এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্ব উত্তম মন্ডলের ঘনিষ্ঠ এবং আত্মীয়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তম মন্ডলের স্ত্রী উমা মন্ডল তৃণমূল প্রার্থীর কাছে হেরে যান। তৃণমূল সদস্য সুজিত মন্ডলের সঙ্গে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল সদস্যা পঞ্চমী সিংহের পরিবারের দীর্ঘদিনের বিবাদ। এলাকায় কার গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করবে তা নিয়ে একাধিকবার বিবাদ দেখা গিয়েছে সুজিত মন্ডল ও পঞ্চমী সিংহের স্বামী রঞ্জিত সিংহের মধ্যে। নির্বাচনের আগে একাধিকবার ওই এলাকা উত্তপ্ত হতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় সরস্বতী পূজোর বিসর্জন কে কেন্দ্র করে আবারও শুরু হয় বোমাবাজি। দুই তৃণমূল কর্মী বোমার আঘাতে জখম হন। ঘটনায় পুলিশ উভয় পক্ষের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে, শনিবার ধৃতদের লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পঞ্চমী সিংহের স্বামীর রণজিৎ সিংহ বলেন, ‘সরস্বতী পূজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে বচসা শুরু হয়, সামান্য বিষয় নিয়ে সুজিত মন্ডলের নেতৃত্বে কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা আমার বাড়ি লক্ষ্য করে একাধিক বোমা ছোড়ে। আমাদের দুই তৃণমূল কর্মী জখম হন, বাড়ির সামনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কংগ্রেস আশ্রিত গুন্ডাবাহিনী কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট করেছে।’ যদিও সুজিত মণ্ডল তার বিরুদ্ধে ওঠা বোমাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই বিষয়ে লালগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মোতাহার হোসেন রিপন বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই, স্থানীয় একাধিক বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিবাদ চলছে। সেই কারণে এই বোমাবাজির ঘটনা।’ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘কে কতটা লুটে-পুটে খাবে সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদ তৃণমূলের, ওই ঘটনার সঙ্গে কংগ্রেসের কোন সম্পর্ক নেই।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct