আপনজন ডেস্ক: যেকোনো মুহূর্তে চলে আসতে পারে ইসরায়েলের স্থল সেনারা। হামাস দমনের নামে তাদের গোলাগুলিতে রক্তের বন্যা বয়ে যেতে পারে। গাজা উপত্যকার দক্ষিণের শেষ শহর রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া বিপুলসংখ্যক অসহায় ফিলিস্তিনিরা সারাক্ষণ এই ভয়ে আছে। কিন্তু প্রাণের ভয়ও ক্ষুধার জ্বালা ভোলাতে পারছে না দিনের পর দিন অনাহার বা অর্ধাহারে থাকা পেটকে। কোনো ত্রাণবাহী ট্রাক দেখা মাত্রই লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দক্ষিণ গাজার মিসর সীমান্তের রাফাহ শহরে ক্ষুধার্ত, হতাশাগ্রস্ত আর আতঙ্কিত মানুষগুলোর কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ। তারা বলছে, ক্ষুধার জ্বালায় ত্রাণের ট্রাক থেকে পাওয়া খাবার পথে দাঁড়িয়েই খেতে শুরু করে দিচ্ছে রাফাহতে আশ্রিতরা। আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবুগুলো পর্যন্ত ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার সময়টুকুও সহ্য করতে পারছে না ক্ষুধায় কাতর মানুষগুলো।ওসিএইচএ বলছে, দক্ষিণ গাজার জনাকীর্ণ শহরটির মানুষের মধ্যে হতাশা ও ক্ষুধার জ্বালার তীব্রতাকেই তুলে ধরছে ত্রাণের ট্রাক থামিয়ে মরিয়াভাবে খাবার খাওয়ার দৃশ্য।ওসিএইচএ বলেছে, পুরো গাজাবাসীর প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানো নিশ্চিত করতে আরো বেশি ত্রাণ সরবরাহ করা অতিজরুরি। এর আগে রাফাহ শহরের মেয়র জানিয়েছিলেন, শহরের স্থানীয় বাসিন্দা ও আশ্রয় নেওয়া বিপুলসংখ্যক নতুন লোকজনের জন্য চাহিদার তুলনায় নিতান্তই কম পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী মিলছে। চলমান সংঘাতের কারণে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ রাফাহ শহরে ঠাঁই নিয়েছে, যা পুরো গাজার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক।ইসরায়েলি স্থল অভিযানের পরিকল্পনায় জনাকীর্ণ শহরটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পশ্চিমা মিত্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেখানে স্থল অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, রাফাহতে হামাসের যোদ্ধারা লুকিয়ে আছে। সেখানে ইসরায়েলি জিম্মিদের পাওয়া যেতে পারে বলেও তাঁর ধারণা।
মিসরে সম্ভাব্য ‘বাফার জোন’
রাফাহ শহরে ইসরায়েলের অভিযান আতঙ্কের মধ্যে সীমান্তের ওপারে মিসরে বিশাল উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করে শরণার্থী রাখার ব্যবস্থা করার গুঞ্জন উঠেছে।স্যাটেলাইট দিয়ে পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টেকনোলজির সংগ্রহ করা চিত্রে মিসরের এই কর্মযজ্ঞ ধরা পড়েছে। মিসরের একটি সূত্র বলেছে, ইসরায়েল যদি রাফাহতে তার পরিকল্পিত স্থল অভিযান চালানো শুরু করে, তাহলে গাজার শরণার্থীদের থাকতে দেওয়ার জন্য উত্তর সিনাইতে একটি দেয়ালঘেরা বাফার জোন নির্মাণের কাজ চলছে। একটি মানবাধিকার সংগঠন বলেছে, এই বাফার জোনে সাত মিটার উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।মিসর সরকার অবশ্য এমন বাফার জোন নির্মাণের প্রস্তুতির খবর অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টও বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের মিসরে সরিয়ে নেওয়ার তাদের কোনো অভিপ্রায় নেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct