নিজস্ব প্রতিবেদক, কালিয়াচক, আপনজন: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাতীয় সড়কের ওপর কার্যত আত্মহত্যা করতে যাওয়ার মুহূর্তে এক তরুণকে বাঁচালেন কালিয়াচক থানার দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার কালিয়াচক থানায় কর্মরত। তারা হলেন মোহা সাদ্দাম হোসেন, বাড়ি মোজমপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কাশিমনগরে এবং সানাউল্লাহ বাড়ি কালিয়াচক -২ গ্রামপঞ্চায়েতের বালিয়াডাঙায়। দুজন সিভিক গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে পৌনে ১১ টা নাগাদ ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। সড়কে চোখের সামনে বালিয়াডাঙা মোড়ে ঘটে যাওয়া কাযত: মৃত্যুর মুখ থেকে এক যুবককে রক্ষা করে শিরোনামে ওঠেছে তাঁরা । তাঁদের এই কাজের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন জেলা পুলিশ থেকে রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমারও। দুই সিভিক জানান, আমরা থানায় ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরছি। রাস্তায় এক যুবক আত্মহত্যার জন্য ঝাঁপ দেয় । সাথে সাথে গাড়িটাকে নিয়ন্ত্রণ করে যুবককে উদ্ধার করে সিলামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাই ও বিষয়টি কালিয়াচক থানায় আইসি সাহেবকে অবহিত করি। উর্ধ্বতন পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে এসে যুবককে পরিবার বর্গের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুলিশ প্রশাসনের তরফে। ওই যুবকের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গার স্বর্ণকার পাড়ায়। তাকে বাঁচিয়ে এমন একটি কাজ করে আমরাও আনন্দ পেলাম। পুলিশ রয়েছে মানুষের পাশে, মানুষ মানুষের জন্য। পুলিশ সুপার আমাদেরকে পুরস্কৃত করায় কাজে আর উৎসাহ বাড়ল। শুক্রবার ওই দুই সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রাথমিকভাবে সম্মান জানান মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদব। তিনি বলেন, রাতে কালিয়াচক থানার বালিয়াডাঙা এলাকায় জাতীয় সড়কের ওপর চলন্ত একটি গাড়ির সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ২০ বছরের এক তরুণ। ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে দেখে ফেলেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার সানাউল্লা শেখ ও সাদ্দাম হোসেন। ওই এলাকাটি অন্ধকার ছিল। দ্রুত গতিতে একাধিক গাড়ি ছুটছিল। কিন্তু প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই দুই সিভিক ভলান্টিয়ার জাতীয় সড়কের ওপর ছুটে গিয়ে চলন্ত গাড়িগুলিকে থামিয়ে রাস্তার ওপরে শুয়ে পড়া ওই তরুণকে উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করে সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী মায়ের হাতে ওই তরুণকে তুলে দেন দুই সিভিক। তাঁদের এই কাজের প্রশংসা করে পুরস্কার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজ্য পুলিসের ডিজি। জেলা পুলিস এদিন ওই দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়। দুই সিভিক সাদ্দাম হোসেন ও মোঃ সানাউল্লাহ জানান আমরা সংগঠিত হয় খুব খুশি। যতটা সম্ভব মানুষকে বিপদ এবং অসুবিধা থেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করি। একটি প্রাণ বাঁচাতে পেরে আমরাও খুব খুশি। পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এই সম্মান আমাদের আরো অনুপ্রাণিত করবে কাজে-কর্মে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct