নিজস্ব প্রতিবেদক, হাওড়া, আপনজন: সিএসআর তহবিলের বরাদ্দকৃত অর্থে রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা এবং হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে এইচএমসি-রোটারি ব্লাড ব্যাঙ্কের শুভ উদ্বোধন হলো। শুক্রবার সন্ধ্যায় এর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। হাওড়ার বঙ্কিম পার্কে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম উদ্বোধক রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায়। এছাড়াও হাওড়া পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ডা: সুজয় চক্রবর্তী, উপ মুখ্য প্রশাসক সৈকত চৌধুরী, দেবাংশু দাস, পুর কমিশনার শ্রুতিরঞ্জন মোহান্তি, বিধায়িকা নন্দিতা চৌধুরী সহ রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কার্য্যালয় নবান্ন অবস্থিত হাওড়ায়। হাওড়া এখন আধুনিক এক শহর। হাওড়া আজ যা করে কলকাতা তা করে আগামীকাল। হাওড়াকে দেখে আমি শিখি। এই ব্লাড ব্যাঙ্কের সুফল পাবেন হাওড়ার মানুষ। হাওড়া পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ডা: সুজয় চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ জানাই। উনিই এই উদ্যোগ নিয়েছেন। হাওড়ার কাছ থেকে আমরা রোজ শিখছি। হাওড়া আগে ছিল কুলি টাউন। এখন হয়ে গেছে আধুনিক সিটি। নিজস্ব ব্লাড ব্যাঙ্ক কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। হাওড়া পেরেছে। হাওড়ার মানুষের জন্য কাজের জিনিস হবে এই ব্লাড ব্যাঙ্ক। আমি নিজে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। তাই সরাসরি অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। সুস্থ হলে অবশ্যই যাব। হাওড়া নাউ লিডিং টাউন। প্রসঙ্গত, হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে উদ্বোধন হল এই অত্যাধুনিক ব্লাড ব্যাঙ্কের। হাওড়ার পঞ্চাণনতলায় ৩ নম্বর বোরো অফিসের কার্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে ওই ব্লাড ব্যাঙ্কটি তৈরি হয়েছে। রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটার সহযোগিতায় হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি হয়েছে। ৮০০ পাউচ রক্ত রাখার ক্ষমতাবিশিষ্ট এই ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত ছাড়াও প্লাজমা, আরবিসি, প্যাক-সেল, রক্তরস, প্লেটলেট সহ সমস্ত রক্তের উপাদান ন্যূনতম মূল্যে পাওয়া যাবে এই ব্লাড ব্যাঙ্কে। হাওড়ার মুখ্য পুর প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, হাওড়া ছাড়াও পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ এখান থেকে রক্ত পাবেন। এছাড়াও এখানে থাকবে একটি ভ্রাম্যমাণ গাড়িও। সেই গাড়ি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে রক্তদান শিবিরগুলিতেও পৌঁছে যাবে। হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে অত্যাধুনিক ব্লাড সেন্টার আজ উদ্বোধন হল। ৩নং বরো অফিসের একটি ফ্লোরে ৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় তৈরি করা হয়েছে এই ব্লাড সেন্টারটি। রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা এর সহায়তায় এটি তৈরি হয়েছে। প্রায় ২ মাস আগে চুক্তি হয়েছে। রোটারি ক্লাব অফ ক্যালকাটা এই ব্লাড সেন্টারটি তৈরির জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করেছে। তারাই যন্ত্রপাতি ইনস্টল করেছে। পুরো প্রকল্পটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর জনমুখী প্রকল্পের সাজুয্য রেখে এই ব্লাড সেন্টারটি করা হচ্ছে। হাওড়ায় একমাত্র হাওড়া জেলা হাসপাতাল ছাড়া আর অন্য কোথাও ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। এখানকার মানুষকে রক্ত সংগ্রহ করতে গেলে দূরে যেতে হয়। এখন সেই সমস্যা থেকে মুক্ত হবে। এই ব্লাড সেন্টারটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এখানে শুধুমাত্র রক্ত দেওয়া এবং নেওয়া হবে না। এখানে রক্তের প্লেটলেট, প্লাজমা প্যাক-সেল প্রভৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এই ব্লাড সেন্টারে ৮০ পাউচ রক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এদিনই রোটারি ক্লাব পুরনিগমকে এই ব্লাড সেন্টারটি হস্তান্তরিত করলো। এর পাশাপাশি রক্ত সংগ্রহের জন্য একটি ভ্রাম্যমান গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে রোটারি ক্লাব সহায়তা করবে। এই ব্লাড ব্যাঙ্কের পাশেই রয়েছে থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল। এখানে প্রতি মাসে প্রায় আড়াইশো থ্যালাসেমিয়া রোগী আসেন। সেই হাসপাতালে উন্নত পরিকাঠামো এবং অত্যাধুনিক ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। এদিন উদ্বোধন হলেও এখনই ব্লাড সেন্টারটি খোলা সম্ভব হচ্ছেনা। পৌরনিগমের ব্লাড সেন্টার চালানোর অভিজ্ঞতা না থাকায় তা চালানোর জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে। আশা করা যায় দেড় মাসের মধ্যে এই ব্লাড সেন্টারটি চালু করা যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct