আপনজন ডেস্ক: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই লোকসভা নির্বোচনে তার নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারেই নিজেকে নিয়োজিত করতে চান। সে সময় মমতার সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কিন্তু মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর অভিষেকের ইচ্ছার পরিবতর্ন ঘটে। আর পরই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের মতোই তিনি আগামী লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচনী ময়দানে দলের নেতা, মন্ত্রী, সমর্থকদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানালেন। শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন দলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদ সদস্য, সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমতিরি সভাপতি সহ দলের পদাধিকারীদের সঙ্গে। সেই বৈঠকে তিনি বুঝিয়ে দেন, লোকসভা নির্বাচনে তিনি ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের মধ্যেই আর সীমাবদ্ধ রাখতে চান না, সমগ্র রাজ্যজুড়েই তার উপস্থিতি থাকবে তৃণমূলকে সাফল্য পাইয়ে দেওয়ার জন্য। তাই তিনি দলীয় জনপ্রতিনিধি সহ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন, জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলার প্রতি বঞ্চনার কথা তুলে ধরে মন জয় করতে হবে। মূলত ১০০ দিনের কাজে করা মানুষদের বকেয়া বঞ্চিত করার কথা তুলে ধরে তাদেরকে সহায়তা করা বা তাদের পাশে দাঁড়ানোর মন্ত্র দেন অভিষেক। তাই এই সব মানুষদের নিয়ে সহায়তা শিবির তৈরি করার নির্দেশ দেন। বেশি দেরি না করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষে আট দিনের শিবির করতে হবে। যা শুরু হবে ১৮ফেব্রুয়ারি আর শেষ হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি।এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রথমে াবশ্য বক্তব্য রাখেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। কিন্তু মূল বক্তব্য রাখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি লোকসভা নির্বাচনের আগে করণীয় কর্তব্য নির্দেশ জারি করেন। আসলে অভিষেক চাইছেন ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা নিয়ে আন্দোলনে নেমে মানুষের মনে সাড়া জাগিয়েছেন নির্বাচনের আগে তা ফের উসকে দিতে। সেই সঙ্গে মানুষকে বুঝিয়ে দিতে চান, মা মাটি মানুষের সরকার সব সময় মানুষের পাশেই আছে এবং থাকবে।
নতুন করে এই আন্দোলনের রূপরেখা কি হবে তা নিয়ে দলকে বার্তা দেন অভিষেক। এতদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলার প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলন, ধর্মতলা, রাজভবন কিংবা দিল্লিতে সীমাবদ্ধ ছিল। এই বার সেই আন্দোলনের রেশ রাজ্যের কোনায় কোনায় পৌঁছে দিতে চান তৃণমূলের যুবরাজ। অভিষেক চান এমনভাবে ভোটের আগে আন্দোলন করতে যাতে কেন্দ্রীয় সরকার দিন পনোরর মধ্যে বাংলার বকেয়া টাকা মেটাতে বাধ্য হয়। সেই লক্ষ্যে বেশি দেরি না করেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর মধ্যেই রবিবার থেকেই আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতা কর্মী সমর্থকদের প্রতি।রাজ্যে প্রায় ৪৮ হাজার গ্রামপঞ্চায়েতের প্রতিটিতে আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে চান। কার ১০ দিনের কাজে বঞ্চিত তাদের তালিকা তৈরি করবে অঞ্চল কমিটি। তা বাস্তবায়িত করদে১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হওয়া শিবির চলবে ২৫ তারিখ পর্যন্ত। প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিবির চালু থাকবে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই শিবির হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন অভিষেক।এই সব পঞ্চায়েতগুলিতে ঠিকবাবে কাজ হচ্ছে কিনা, শিবিরি যথাযথ চলছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে অভিষেকের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ককে অন্তত দু’বার করে পরিদর্শনে যেতে হবে। সাংসদেরা নিজেদের এলাকায় পাঁচটি করে ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। যেখানে দলের বিধায়ক নেই, সেখানে ব্লক সভাপতিরা এই দায়িত্ব নেবেন। কোথায় এই শিবির হচ্ছে, সেটা মানুষকে আগে থেকে জানাতে হবে। এখানে একটা ফর্ম দেওয়া হবে ৷ সেই ফর্ম মানুষ ফিলাপ করার পর, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে তা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে । শিবির শেষের দুটি দিনের মধ্যেই যাতে সাধারণ মানুষ টাকা পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে তাঁদের ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct