আপনজন ডেস্ক: বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে তৃণশূলের প্রস্তাব কংগ্রেস না মানায় এ রাজ্যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে একলা চলো রে নীতি অবলম্বন করছেন মমতা। সেই আবহের মধ্যে আগামী লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবে রাজ্য সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে চাইছে। বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী শক্তিকে এককাট্টা করতে রাজ্য সিপিএমের তরফে এই উদ্যোগ নিয়েছেন মুহাম্মদ সেলিম। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী জোট নিয়ে বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম আলোচনা বসতে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির সঙ্গে।দেরিতে হলেও প্রদেশ কংগ্রেস ও রাজ্য সিপিএমের এই কাছাকাছি আসার পিছনে রয়েছে মমতার কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতাকে বাই বাই জানানো। কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বহু আলোচনার পর রাজ্যে কংগ্রেসকে ২টির বেশি আসন তৃণমূল ছাড়বে না বলে জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রদেশ কংগ্রেস তাতে নারাজ হওয়ায় লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের কোনও রকম সম্ভাবনা ইতিমধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরদিকে তৃণমূলের সঙ্গে যে তারা জোটে আগ্রহী নয় তা তারও আগে দলের হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারপর মমতার একটি মন্তব্য কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোটের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেয়। সম্প্রতি মমতা বলেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দেশে ৪০টি আসন পেযে দেখাক। সেই মন্তব্যকে ঢাল করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। ফলে, তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও জোট প্রসঙ্গ ফের আসে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করলে। রাজ্যর সরকার রাহুলের যাত্রায় প্রশাসনিক বাধা তৈরি করায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায় কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে। রাহুলের যাত্রা বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডে প্রবেশের পর তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের মুখে আর কোনও উচ্চ বাচ্য শোনা যায়নি।ফলে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হচ্ছে না বলেই ধরে নেওয়া হয়।সেই পরিস্থিতিতে এবার বামেদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বহরমপুরের টাউন ক্লাবে ২ নেতার মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম। সেলিম আরও জানান, বামফ্রন্টের বাইরের শক্তি এবং কংগ্রেস, আইএসএফ’র সঙ্গেও কথা বলছি। কথা হবে আন্দোলন নিয়ে, নির্বাচন নিয়েও। তাই লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে প্রাথমিক আসন রফা নিয়ে আলোচনায় বসবেন তিনি। বহরমপুর টাউন ক্লাবে নিরপেক্ষ জায়গায় হবে বৈঠক। সূত্রের খবর, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের কে কোথায় লড়বে তার প্রাথমির একটি রূপরেখা তৈরি হতে পারে এদিন। তবে, এই বৈঠকে আইএসএফকে ডাক হয়নি বলে সূত্রে খবর। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হলে সিপিএম আইএসএফের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। উত্তরবঙ্গে কংগ্রেস ও দক্ষিণবঙ্গে বামেরা বেশি আসনে লড়তে পারে বলে সূত্রের খবর। অবশ্য, আইএসএফ এই বৈঠকে শামিল না হওয়ায় বাম ও খংগ্রেসের আসন রফা নিযে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্যে, আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী যায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চেয়েছেন। সে প্রসঙ্গ সিপিএম ও কংগ্রেসের আলোচনায় উঠতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে।তবে, রাজ্যে জোট নিয়ে বাম কংগ্রেসের এই উদ্যোগ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি তৃণমূল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct