মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পিঠস্থান দক্ষিণ দামোদর। রায়না খণ্ডঘোষ মাধবদিহি ও জামালপুরের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে অবস্থিত। এখানে যেমন আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা রাসবিহারী বসু জন্মগ্রহণ করেছিলেন তেমনি জাতীয় কংগ্রেসের দুবারের সভাপতি দানবীর আইনোগ্য রাসবিহারী ঘোষ, জন্মেছিলেন ভগৎ সিং এর সঙ্গী হিসাবে ইতিহাস বিখ্যাত আছেন বটুকেশ্বর দত্ত। ধর্মমঙ্গল কাব্যের সমস্ত কবিরা এখানে জন্মেছিলেন যেমন কবি ঘনরাম চক্রবর্তী, কবি কঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী। সংবিধান রচনা কারিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন দক্ষিণ দামোদরের ভূমিপুত্র নাজির উদ্দিন আহমেদ। আসামের সিলভারের হিন্দু রাজা তৈরি করে দিয়েছিলেন মসজিদ যা আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ৫০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত একলক্ষ্মীর সাহচানদ পীরের দরগা, মসজিদ পর্যটনের অন্যতম পিঠস্থান হয়ে আছে। এই দক্ষিণ দামোদরে দুই মুঘল সেনাপতিকে হত্যা করা হয়েছিল যাদের নাম অনুসারে বর্ধমানে খাজা আনোয়ার ও খাজা আবুল কাশেম এর নামে নবাব বাড়ি ও জায়গার নামকরণ করা হয়েছে। তো এই সমস্ত জায়গাগুলোকে নিয়ে দক্ষিণ দামোদরে পর্যটন কেন্দ্র করার আবদার ছিল সাধারণ মানুষের। সেই বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. রমজান আলী, বিশিষ্ট শিক্ষক রাজেশ হালদার, বিশিষ্ট কবি লেখক কাজী জুলফিকার , সাংবাদিক প্রদীপ মন্ডল, স্বাধীনতা সংগ্রামী তোজাম্মল হকের পৌত্র কাজী ফজলে বারি, অরণ্য রিসোর্ট এর কর্ণধার সেখ পারভেজ ও বিশিষ্ট অতিথিরা। সংহতি মেলায় খালেরপুলে এই অনুষ্ঠান ঘিরে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।। এই আলোচনা সভায় ড. রমজান আলী বলেন, দক্ষিণ দামোদর একটি সমৃদ্ধশালী জনপদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বহু প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী এই দক্ষিণ দামোদর। তিনি একটি মানচিত্র তৈরি করে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে প্রেরণ করেছেন। দক্ষিণ দামোদর পর্যটন মানচিত্রে এলে এখানকার আর্থসামাজিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক বিষয় এই এলাকার মানুষ সুবিধা পাবে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংবাদিক মোল্লা শফিকুল ইসলাম। মেলা কমিটির সম্পাদক রাহুল আজম ,শেখ এরশাদ ,আদিত্য কুমার ঘোষ সহ মেলার অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct