সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা ব্লকের ময়া এলাকায় তৈরি হওয়া লালগোলা-রাজশাহী নৌপথের আন্তর্জাতিক নদী বন্দরের উদ্বোধন করা হলো। সোমবার কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এই বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। একটা সময় মুর্শিদাবাদের লালগোলা থেকে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জে পন্য আমদানি-রপ্তানি করার অন্যতম জলপথ ছিলো এই নৌপথ। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে) মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হলে এই বন্দর বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নৌ-প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ফলে সুলতানগঞ্জ থেকে জঙ্গিপুর মহকুমার ধুলিয়ান পর্যন্ত প্রায় ৭৮ কিলোমিটার নৌপথের অনুমোদন ছিলো, কিন্তু পদ্মার নাব্যতার সংকটে শেষ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে লালগোলার ময়া এলাকায় এই বন্দর তৈরীর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২০ সালে উদ্বোধনের কথা থাকলেও অনেক দেরিতে কাজ শুরু হয় এই বন্দরের। দীর্ঘ ৫৯ বছর পর ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার লালগোলার ময়াতে অবস্থিত নদী বন্দরের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। সূত্রের খবর অনুযায়ী বালি, পাথর, সিমেন্ট, টাইলস সহ বিভিন্ন শস্য সামগ্রী রপ্তানি করা হবে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে মূলত মাছ এবং পাট ও তুলা জাতীয় দ্রব্য আমদানি করা হবে ভারতে। ময়া বন্দর থেকে ১২ নম্বর (৩৪ নম্বর) জাতীয় সড়কের দূরত্ব এবং সুলতানগঞ্জ বন্দর থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের দূরত্ব অনেকটা কম হওয়ায় খুব সহজে বাংলাদেশের রাজশাহী সহ পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে পূর্ব ভারতের পন্য আমদানি-রপ্তানিতে এক আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছে বিশিষ্ট মহল। সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে ১০০ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে একটি জাহাজ লালগোলোর ময়া থেকে ছেড়ে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জে রওনা দেয় দুপুর ১২ টা নাগাদ। অন্যদিকে সুলতানগঞ্জ বন্দর থেকে ১১ টন গার্মেন্টস তুলা নিয়ে দুপুর ১ টা নাগাদ লালগোলার ময়া বন্দরে এসে পৌঁছায়। এই বন্দর তৈরি হওয়ায় স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশাবাদী লালগোলা এলাকার সাধারণ মানুষজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct