আপনজন ডেস্ক: ৪০০ কোটির বেশি মানুষের মহাদেশ। সেই মহাদেশের ফুটবল-শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে চূড়ান্ত লড়াইটা এমন দুই দেশের মধ্যে হচ্ছে, যাদের মিলিত লোকসংখ্যা টেনেটুনে দেড় কোটির মতো।
কোনো দেশের জনসংখ্যা কমবেশির সঙ্গে তাদের ফুটবল-সামর্থ্যের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে বেশি মানুষের দেশ ফাইনালে থাকা মানে উন্মাদনা-উত্তেজনাটাও বেশি থাকা। সেই অর্থে, দোহায় আজ এশিয়ান কাপের ফাইনাল অন্তত আয়োজকদের জন্য কিছুটা হয়তো ‘অপ্রত্যাশিতই’।
জর্ডান অথবা কাতারের সেসব নিয়ে ভাবতে বয়েই গেছে! দুই দেশ আজ ৮৯ হাজার ধারণক্ষমতার লুসাইল স্টেডিয়ামে নামবে দুই রকম স্বপ্ন নিয়ে। জর্ডান তো ফাইনাল পর্যন্ত আসার পথেই ইতিহাস গড়েছে। মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালের বাধাই তারা পেরিয়েছে এবার প্রথম। ফাইনাল জিতলে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৮৭ নম্বরে থাকা দেশটির গল্পটা রূপকথার চেয়ে কম কিছু হবে না।
র্যাঙ্কিংয়ে ৫৮ নম্বর কাতারের জন্য অবশ্য এটা খুব চেনা মঞ্চ। এই টুর্নামেন্টে তারাই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। ২০০৪ সালে জাপানের পর প্রথম ও সব মিলিয়ে পঞ্চম দেশ হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ তাদের সামনে। কাগজে-কলমেও বেশ এগিয়ে প্রতিপক্ষের চেয়ে, আর নিজের মাঠে ফাইনাল খেলার বাড়তি সুবিধা তো আছেই।
তবে ফাইনালে ওঠার পথে জর্ডান কাগজ-কলমের এমন অনেক হিসাব ভুল প্রমাণ করেছে। শেষ ষোলোতে ইরাক ও সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশিয়ার দুই পরাশক্তিকে হারিয়ে আসা জর্ডানের মূল শক্তির জায়গাটা বোঝা যাবে তাদের লেফটব্যাক সালিম-আল-আজালিনের কথা থেকে, ‘আমরা পুরো দল একই হৃদয়, একই আত্মা হয়ে খেলি। এতটাই ঐক্যবদ্ধ আমরা।’
অথচ এই জর্ডানই গত বছর ৭টি ম্যাচ খেলে একটাও জেতেনি, হেরেছে ৬ ম্যাচেই। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দলের মরোক্কান কোচ হুসেইন আম্মোতাকে ছাঁটাই করার দাবিও উঠেছিল তখন। এশিয়ান কাপে এসে সেই সমালোচকদের একটা জবাব দিতে পেরে আম্মোতা বেশ খুশি, ‘এটা আমার জন্য ব্যক্তিগত একটা চ্যালেঞ্জও ছিল। আশা করছি, ফাইনালের প্রথম বাঁশি বাজার পর থেকেই আমরা তৈরি থাকব এবং সমালোচকদের আরও একবার জবাব দিতে পারব।’
তাঁর প্রতিপক্ষ, কাতারের স্প্যানিশ কোচ ‘টিনটিন’ মার্কেজ লোপেজও দাঁড়িয়ে কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনের সামনে। তবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ঘরের মাঠে শিরোপা ধরে রাখতে না পারলে সেটা যে তাঁরই বিশাল এক ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হবে, এটাও ভালোই জানেন। নিজেই তাই বলেছেন, ‘স্পেনে একটা কথা আছে, দ্বিতীয় হওয়া মানে হেরে যাওয়াদের মধ্যে প্রথম হওয়া।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct