নিজস্ব প্রতিবেদক, কোচবিহার, আপনজন: জনজাতি অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ফের আন্দোলনে নামল নস্যশেখদের সংগঠন। এক প্রেস বিবৃতিতে এই সংগঠনের পক্ষে জানানো হয়, ২০১৯ সালে এন আর সি চালুর ব্যাপক সম্ভাবনায় দিকে দিকে বিভিন্ন জনজাতি অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আন্দোলনে নামে। সেই আন্দোলনে একটি দিক ছিল ভূমিপুত্র স্বীকৃতি ও উন্নয়ন বোর্ড আদায়ের আন্দোলন। উত্তরবঙ্গে মুসলিম জনগোষ্ঠীও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী নস্যশেখ মুসলিমদের নিয়ে যেসব আন্দোলন গড়ে উঠে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি হল নস্য শেখ উন্নয়ন মঞ্চ ও নস্যশেখ উন্নয়ন পরিষদ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, নস্যশেখ উন্নয়ন মঞ্চ ২০১৪ সাল থেকে নস্যশেখদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন শুরু করলেও নস্যশেখ উন্নয়ন পরিষদ ২০১৯ সালের শেষের দিকে পথ চলা শুরু করে। এই দুটি সংগঠনের জনসমর্থন তৈরিতে যথাক্রমে প্রধান ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন গোলাম নবী আজাদ , কাওসার আলম ব্যাপারী, নজরুল মিয়া, এ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান ব্যাপারী,সাহীন আলী সরকার, সাহানুর হোসেন টোটন , রাহুল হক, বাবলু হোসেন সহ অন্যান্যরা।
আন্দোলনের ফলে ২০২১ সালে রাজ্য সরকার নস্যশেখ জনগোষ্ঠীর জন্য নস্যশেখ উন্নয়ন বোর্ড তৈরি ঘোষণা করে কোচবিহার জেলা শাসককে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে। কাওসার আলম ব্যাপারী ও গোলাম নবী আজাদের সাংগঠনিক দক্ষতা ও বক্তব্য প্রদানের বিশেষ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে উভয় সংগঠন উত্তরবঙ্গের রাজপথ উত্তাল করে আন্দোলনের মাধ্যমে। গোলাম নবী আজাদের নেতৃত্বে নস্যশেখ উন্নয়ন মঞ্চের দীর্ঘ আন্দোলনে তৈরি করা ভূমিকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলনের বিভিন্ন কৌশলে রাজ্য সরকারের কাছে চাপ বাড়াতে থাকেন নস্যশেখ উন্নয়ন পরিষদের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাওসার আলম ব্যাপারীর নেতৃত্বে বিশেষ এ্যাকশন টিম। উন্নয়ন বোর্ড পাওয়ার আন্দোলনে বিশষ্ট আইনজীবী মনিরুজ্জামান ব্যাপারী ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব এ্যাডভোকেট আব্দুল জলিল আহমেদের ভুমিকাও বিশাল। এ ব্যাপারে কাওসার আলম বাপারী বলেন, উন্নয়ন বোর্ড গঠনে রাজ্য সরকার কৌশলে অপেক্ষাকৃত আন্দোলনে কম ভুমিকার ব্যক্তিদের অনেকেই বোর্ড মেম্বার হিসেবে নিয়োগ দেন। সরকার সম্ভবত আন্দোলনে প্রথম সারির নেতৃত্বদের এড়িয়ে যায় অসুবিধার কারণ হতে পারে এ মর্মে । চলতি বছরের জানুয়ারির ২৯ তারিখ কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ নস্যশেখ উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে দেবেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ইতিমধ্যে দশ খানার অধিক লিস্ট জমা পড়েছে উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পদে অন্তর্ভুক্তির আবেদনে। সেগুলো এখন রাজ্য সরকারের কাছে বিবেচনাধীন। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ বোর্ড ঘোষিত হবার প্রবল সম্ভাবনা। এবারেও হয়তো যোগ্য ব্যক্তিরা বঞ্চিত হয়ে, অপেক্ষাকৃত কম ভুমিকার রাখা ব্যাক্তিরা দায়িত্ব পেতে পারে। আন্দোলনে যারা বিরোধিতা করেছিল তারাও হয়তো বোর্ড মেম্বার হয়ে বসে থাকবে বলে সুত্র মারফত খবর। এ রকম হলে আন্দোলনের অগ্রণী ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের এবারেও এড়িয়ে যাওয়া হবে বিশেষ অপ উদ্দেশ্যে বলে আমরা মনে করব। তাই আমরা নিরপেক্ষ প্রতিবাদী মঞ্চের তরফে সরকারের প্রতি দাবি রাখছি যারা আন্দোলনে প্রধান ও বিশেষ অবদান রেখেছে তাদের পূর্ণাঙ্গ নস্যশেখ উন্নয়ন বোর্ড গঠনে অগ্রাধিকার দেয়া হোক।প্রকৃত যোগ্যরা জায়গা না পেলে বঞ্চনার ক্ষোভ কঠিন ফল বয়ে আনবে ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct