আপনজন ডেস্ক: উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অস্থিরতার মধ্যেই আজ পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭ হাজারেরও বেশি প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার ভোট দিচ্ছেন। প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র ৩১৩ জন নারী।
আজকের ভোটেই নির্ধারিত হবে আগামী পাঁচ বছর পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির শাসন ক্ষমতায় কারা থাকবেন। তবে বৈশ্বিক নানা মিডিয়া ও থিংক-ট্যাংক বলছে, চতুর্থ মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নওয়াজ শরীফ।সংবাদমাধ্যম এপি জানিয়েছে- পাকিস্তানে ফেরার পর আদালত কর্তৃক তার সাজা বাতিলের পর চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তার পথ পরিষ্কার রয়েছে।সংবাদমাধ্যম বিবিসি, গার্ডিয়ান, এএফপিসহ আরো কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়াও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে- তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো দেশটির নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসবেন। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের দিন দেশটির জিও নিউজের বিপোর্টে এমনটা বলা হয়েছে। পাকিস্তানের রাজনীতিতে নওয়াজ শরীফের ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়। তিনি এর আগে তিনবারই ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। গত বছর ‘স্বেচ্ছা নির্বাসন’ থেকে ফিরে আসেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলাগুলো থেকে নিজেকে রেহাইয়ের সুযোগ পান। সর্বশেষ তিনি ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নওয়াজ শরীফকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষুব্ধ সমর্থকদের মুখোমুখি হবেন তিনি। দেশটির জনপ্রিয় এই নেতা বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। সাইফার মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড, তোশাখানা মামলায় ১৪ বছর এবং ‘অবৈধ’ বিয়েতে সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত তিনি।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) এই শীর্ষ নেতা যদি আজ ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী না হন তাহলে তা অবাক করারই বিষয় হবে। এদিকে ব্লুমবার্গের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে করাচিতে পাকিস্তানের অভিজাত ব্যবসায়ী নেতাদের এক সমাবেশে অনেকেই বলেছেন, তারা একটি ঝুলন্ত সংসদের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যেখানে একটি দুর্বল জোট সরকার গঠন হতে পারে। তাদের বেশিরভাগই বলেছেন, এই জোট সরকারের নেতৃত্ব দেবেন নওয়াজ শরীফ কিংবা তার ভাই শেহবাজ শরীফ। শেহবাজও একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক ফেলো মাদিহা আফজালের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লুমবার্গের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- নওয়াজ যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। একটি হচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। অন্যটি হলো একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক পরিচালনা করা। সিএনএনের রিপোর্ট বলছে, প্রচারের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরীফ। ৭৪ বছর বয়সী এই নেতার সঙ্গে প্রতিদ্বদ্বন্দ্বিতা হবে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী বিলাওয়াল ভুট্টোর সঙ্গেও। সাবেক সিনিয়র ব্রিটিশ কূটনীতিক ও কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক টিম উইলাসি-উইলসির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- নওয়াজ শরীফ একজন অভিজ্ঞ। তিনি সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারদর্শী। তিনি ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক চাইবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct