মাফরুজা মোল্লা, জয়নগর, আপনজন: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার অন্তর্গত ধোসা চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলপি গ্রামের বাসিন্দা। বাবা থেকেও নেই! মহসিনা ও মফার্জিলা গাজী শুধু কাঁদছে আর বাড়িতে যে যাচ্ছে তাকেই মহসিনা তাদের মাকে বাঁচানোর কারত আর্জি জানাচ্ছে। প্রায় ছয় বছর আগে তাদের মা তহুরা গাজী দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার অন্তর্গত কলেজ মোড় এলাকায় দিদির বাড়িতে গিয়েছিলেন তহুরা গাজী। দিদির বাড়িতে ফেরার পথে ক্যানিং থানার অন্তর্গত সাতমুখী এলাকায় অটো ও মোটর ভ্যান এর মুখোমুখি সংঘর্ষে তহুরা গাজীর পা ভেঙে যায়। তবে দ্রুত চিকিৎসার পরে। অপারেশন হয়ে গেলেও পায়ের ভেতরে থাকা পাত না বের করতে পেরে দিনকে দিন। সেই জায়গাটি অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তার কারনে সমস্যার সম্মুখীন হয় । চলাফেরা থেকে হাঁটতে গেলে। এরপর থেকে অসহায় হয়ে পড়ে তহুরা। সম্পর্কে তার এক বোনের কাছে আশ্রয় নেয় তহুরা। বর্তমানে অসহায়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তহুরা। মেয়েদেরকে নিয়ে এ কনকনে ঠান্ডা রাস্তার পাশে থাকা একটি ত্রিপুল খাটিয়ে। তহুরা বলেন অসহায় মধ্যে কয়েকবার দুয়ারের সরকারের লক্ষীর ভান্ডারের জন্য আবেদন করেও মেলেনি লক্ষীর ভান্ডার মতন প্রকল্প । তার বাচ্চাদের মাথার ছাদ এবং বেঁচে থাকার আশ্রয়স্থল ভরসা একমাত্র তাদেরই মা। তার মার এমন করুণদশা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে দুটি মেয়ে।তাদের বাবা প্রায় দুবছর আগে অন্যত্র চলে গিয়েছে ছেড়ে তার মাকে। তহুরা দুই ছেলেও ঠিক মতন দেখেন না মাকে। মায়ের আদর স্নেহে লেখাপড়া করে বড় হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে মায়ের এমন করুন অবস্থা দেখে স্কুলে যাওয়া বন্ধ দিতে হল। দুই বোন স্থানীয় স্কুলের চতুর্থ ও ওয়ানের শ্রেণীর পড়ুয়া। দুই বোনই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতে রান্না করা সহ যাবতীয় কাজ করে থাকে। তাই তাদের আর্জি মাকে বাঁচানো। অসহায় পরিবারে হাল ফেরাতে ভিন রাজ্যে গিয়ে কাজ করতেন বাবা। তবে হঠাৎই এমন তার মায়ের হওয়াতে পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। প্রতিদিন মায়ের পাশে বসে দুই বোন সমানে কেঁদে চলছে।কবে তাদের মা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে! ও তহুরা গাজী এখনও জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন। ঠিক মতন চিকিৎসাও করতে পারছেন না। কোনমতে রেশনের চাল পেলেও উপার্জন না থাকায় রান্না খাওয়া ঠিক মতন করতে পারেন না। সম্পর্কে দিদির বাড়িতে থাকা পরিবারের থেকে চেয়ে খেয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে তহুরা।তহুরা দাবি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার। এই লক্ষীর ভান্ডার যদি পেতাম অনেকটা উপকৃত হতাম। তাও আমার কপালে নেই। কয়েকবার ফ্রম জমা দিয়ে মেলেনি। যদি দ্রুত আমার দিকে মুখ তুলে তাকায় সরকার আমি উপকৃত হব।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি আমাদের করজোড়ে অনুরোধ তহুরা গাজী যাতে সুচিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারে এবং তার ছেলে ও মেয়ে যাতে অসহায় হয়ে না পড়ে এবং লেখাপড়া করে বড় হতে পারে তারজন্য সরকারের ভাবে হোক কিংবা বেসরকারী ভাবে কোন সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে বাঁচবে গাজী পরিবার। তা নাহলে সমস্ত কিছুই শেষ হয়ে যাবে। অসুস্থ তহুরা গাজী মেয়ে মহসিনা গাজীর আবেদন,‘আমাদের কেউ নেই। একমাত্র মায়ের-ই ভরসা।বিছানায় শয্যাসায়ী রয়েছে।দয়া করে আমাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct