নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: খবরের জেরে সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন জেলা পরিষদের সদস্যা।সরজমিনে গিয়ে খতিয়ে দেখলেন পরিস্থিতি। দৃষ্টিশক্তিহীন অসহায় বৃদ্ধের দুরবস্থা দেখে হতবাক হলেন জেলা পরিষদ সদস্যাও। সটান নিজের গাড়িতে করেই নিয়ে গেলেন ব্লক দপ্তরে। সাথে নিয়ে গেলেন বিশেষ ভাবে সক্ষমের সার্টিফিকেট না পাওয়া দুর্ঘটনাগ্রস্থ আরেক ব্যক্তিকেও। সেখানে গিয়ে নিজের দায়িত্ব নিয়ে কাগজপত্র জমা করালেন। কথা বলালেন ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের সঙ্গে। সাথে ব্যক্তিগত ভাবে অসহায় পরিবারের হাতে তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রী। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভবানীপুরের বাসিন্দা বিশুয়া দাস (৬৬)। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তিহীন তিনি। কিন্তু বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেও পাননি।অন্তরায় হয়ে দাড়িয়ে ছিল কাটমানি। পাননি বার্ধক্য ভাতাও।এমনকি মাটির ঘর ভেঙে গেলেও আবাস যোজনায় বারবার আবেদন করেও ঘর মেলেনি।স্ত্রী কুশমি দাস (৫০) লোকের বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে কোনোক্রমে সংসার চালান।হাট বাজারে পড়ে থাকা পচা সবজি খেয়ে দিন কাটে তাদের। এই পরিবারের দুরবস্থার খবর সম্প্রচারিত হয় সংবাদ মাধ্যমে। খবর দেখে এই পরিবারের দুরবস্থার কথা জানতে পারেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্যা মর্জিনা খাতুন।তারপরেই এদিন ওই পরিবারের কাছে সোজা চলে যান মর্জিনা।সরজমিনে খতিয়ে দেখেন তাদের পরিস্থিতি। পরিবারের দুরবস্থা দেখে মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে মর্জিনার। ব্যক্তিগত ভাবে এক মাসের মতো খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন ওই পরিবারের হাতে। তারপরে নিজের গাড়ি করে নিয়ে যান হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক দপ্তরে। এছাড়াও বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ মতলেনকেও সাথে নিয়ে যান মর্জিনা।যিনিও দুই বছর আগে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে পায়ে গুরুতর চোট পান। কিন্তু বিশেষ ভাবে সক্ষমের জন্য সার্টিফিকেটের আবেদন করে পাননি।দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। বিডিওর আশ্বাস পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কেঁদে ফেলেন বিশুয়া দাস। দৃষ্টিশক্তিহীন অসহায় বৃদ্ধ বিশুয়া দাস বলেন ‘আমরা সত্যি খুব সমস্যার মধ্যে ছিলাম। অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটতো। আজ মর্জিনা খাতুন পাশে দাড়ালেন।বিডিও আশ্বাস দিলেন।অত্যন্ত প্রয়োজন সাহায্যের।’আরেক বাসিন্দা শেখ মতলেন জানান, দুই বছর আগে ট্রাকের ধাক্কায় আমার পায়ের ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে আবেদন করেও আমি প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট পাইনি।আজ বিডিওর সঙ্গে দেখা হল। উনি আশ্বাস দিলেন।হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা খাতুন জানান, আমি খবরের মাধ্যমে জানতে পারি। আজ দেখা করলাম। ওদের সাথে করে ব্লকে নিয়ে এলাম। দ্রুত সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন মন্ডলের বক্তব্য, আজ কাগজপত্র নিয়ে ফিলাপ করেছি।সার্টিফিকেট ইস্যু করেছি। ওনারা পেয়ে যাবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct