স্টকহোম: আরব বিশ্ব ও মুসলমানদের সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের একসময়ের দাপুটে জাতি ভাইকিংদের সম্পর্ক থাকতে পারে। সুইডেনে নবম শতাব্দীর একটি কবরে পাওয়া ভাইকিং নারীর একটি আংটি থেকে সে সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। অষ্টম শতকের শেষ থেকে এগারো শতকের শেষ দিক পর্যন্ত নর্স ভাষাভাষী ভাইকিংরা মাতৃভূমি স্ক্যান্ডিনেভীয় অঞ্চল থেকে উত্তর ও মধ্য ইউরোপ পর্যন্ত বিচরণ করেছিল। তাঁরা এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য করত।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কাছে বির্কা এলাকায় একটি কবর খুঁড়ে ভাইকিং নারীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। ভাইকিংদের জয়জয়কারের সময়ে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই বির্কাকে ১৯৯৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব নিদর্শন হিসেবে ঘোষণা দেয়। বির্কার কবরে পাওয়া ওই নারীর হাতের আংটিতে আরবি হরফে লেখা ‘ইল্লাল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ ছাড়া’। উনিশ শতাব্দীতে কবরটি খনন করা হয়েছিল। বিবিসির খবরে বলা হয়, সুইডেনের বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক জালমার স্টলপে কবরটি খনন করেন। পুরো স্ক্যান্ডিনেভিয়াজুড়ে এটি একমাত্র আরব নিদর্শন। ওই নারীর পরনে ছিল স্ক্যান্ডিনেভিয়ান স্থানীয় পোশাক। দশম শতাব্দীতে আংটিতে খোদাই করে আরবি হরফ লেখার প্রচলন ছিল।
স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সেবাস্টিয়ান ওয়ার্মল্যান্ডার ও তাঁর সহকর্মীরা বলছেন, ভাইকিংদের সঙ্গে আব্বাসীয় খিলাফতের যে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল, এ আংটিই তার প্রমাণ। আবার এমনও হতে পারে যে, এই নারী কিংবা তাঁর কোনো ঘনিষ্ঠজন আব্বাসীয় খলিফাদের শাসনাধীন আরব ভূখণ্ড সফর করেছিলেন বা ওই অঞ্চল থেকে এসেছিলেন। ২০০৮ সালে আবুধাবির একটি সংবাদপত্রে লেখা এক নিবন্ধে ইতিহাসবিদ ফারহাত হুসেইন লিখেছেন, ভাইকিংরা রুপার প্রতি যতটা আকর্ষণবোধ করত, সোনার প্রতি তাদের আগ্রহ ততটা ছিল না। ভাইকিং নারী কিংবা পুরুষের জন্য রুপা ছিল সামাজিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তির প্রতীক। তারা মৃতের সঙ্গেও রুপার অলংকার দিত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct