আল সাদি, ঢাকা, আপনজন: কহর দরিয়াখ্যাত বাংলাদেশের গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজামায়েত ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমায় দেশ বিদেশ থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমাদের আগমন সার্থক করতে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেচ্ছায় শ্রম দিয়ে ময়দান প্রস্তুতির কাজ করে যাচ্ছেন। যা প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে তাবলীগ জামাতের সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবী মুসল্লিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতিতে। আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যেই দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ মুসল্লী ইজতেমা মাঠে আসবেন। তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে তারা অবস্থান নিবে। ইজতেমা মাঠে সেচ্ছায় কাজ করতে আসা মো. মিনহাজ রহমান আপনজন পত্রিকাকে বলেন, ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। একেক গ্রুপ একেক ধরনের কাজ করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমে কেউ প্যান্ডেল তৈরিতে, কেউ অবার রাস্তাঘাট মেরামতে কাজ করছেন। আমরা নিচু জমি ভরাট, সামিয়ানা টানানোর কাজ করছি পাশাপাশি পয়োনিষ্কাশনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।
সরেজমিনে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিশ্ব ইজতেমা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদীর পূর্বপাড়ে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর পশ্চিম কোনায় বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শামিয়ানা টানানো, বিদ্যুৎ ও মাইক সংযোগের জন্য তার টানানোসহ তাশকিল কামরা, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের বয়ান শোনার জন্য পৃথক কামরা তৈরি করা হয়েছে। ১৬০ একর জায়গায় বিশাল সামিয়ানা টানানোর কাজ প্রায় শেষ। বিশাল ময়দানে খিত্তাভিত্তিক মাইক বাঁধা এবং বৈদ্যুতিক লাইট টানানোর কাজ শেষ হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় ধর্মীয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ও কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। র্যাবের হেলিকপ্টার টহলের পাশাপাশি পোশাকে-সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন, ডগ স্কোয়াড, নৌ টহলসহ সব ধরনের নিরাপত্তা থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মুসল্লি ইজতেমায় আসবেন। তাদের নিরাপত্তা ও নাশকতারোধে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল ফাতে মোঃ সফিকুল ইসলাম আপনজন পত্রিকাকে বলেন, দুই পর্বের ইজতেমা সফল করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিক প্রস্তুতিমূলক সভাও করা হয়েছে। এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে আগামী ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct