নাজিম আক্তার, চাঁচল, আপনজন: অসুস্থ স্ত্রী-র হয়ে পরীক্ষার হলে প্রক্সি দিতে এসে ধরা পড়ে গেলেন যুবক। শুক্রবার ছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বিভাগের পঞ্চম সিমেস্টারের তৃতীয় দিনের পরীক্ষা। সেখানেই অসুস্থ স্ত্রীর হয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন রতুয়ার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ শংকর দাস। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে স্ত্রী পুষ্পা চৌধুরির অ্যাডমিট কার্ডে নিজের ছবি লাগিয়ে এসেছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। অ্যাডমিট কার্ড মেলাতে গিয়েই খটকা বাধে পরিদর্শকের। অ্যাডমিট কার্ডে নাম ছিল পুষ্পা চৌধুরী। অথচ ছবি রয়েছে ছেলের। সঙ্গে যে রোল নম্বর এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর রয়েছে তার সঙ্গে হাজিরা খাতা মেলাতে গিয়ে দেখা যায় এক মেয়ের ছবি।পরিদর্শক প্রশ্ন করলে অভিযুক্ত প্রথমে দাবি করেন এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুল। পরে জানান, তিনি বোনের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন।পরে পরিদর্শক বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানান। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মানিকচক কলেজের সঙ্গে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেন। জানা যায় আসল পরীক্ষার্থীর নাম পুষ্পা চৌধুরী। তিনি মানিকচক কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বদলে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন রতুয়ার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ শংকর দাস।এরপরই অভিযুক্ত স্ত্রীর হয়ে পরীক্ষা দিতে আসার কথা স্বীকার করে নেন।ঘটনা জানাজানি হতেই চাঁচল থানায় খবর দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। থানার পক্ষ থেকে ওই ভুয়ো পরীক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।এদিকে এই ঘটনায় তাজ্জব কলেজের অধ্যাপকরা। হতভম্ব ছাত্রছাত্রীরাও। চাঁচল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অজিত বিশ্বাস বলেন,‘এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।আমরা পুলিশের হাতে ওই ব্যক্তিকে তুলে দিয়েছি।পুলিশ খতিয়ে দেখবে।’ এক পরীক্ষার্থী শিল্পা মণ্ডল বলেন, ‘এর আগের দুটো পরীক্ষায় মেয়েটি নিজেই পরীক্ষা দিয়েছিল। আজকে দেখছি এই ঘটনা। আমরাও অবাক।’ পরিদর্শক মহম্মদ আদিল সরকার জানান,‘অ্যাডমিট কার্ড ও হাজিরা খাতা মেলাতে গিয়েই সত্যিটা ধরা পড়ে।’ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, কলেজের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেবে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct