সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: এক ব্যক্তি, এক পদ! একটা সময় তৃণমূলের এই নীতি চর্চা ফেলেছিল বাংলার রাজনীতিতে। অথচ সেসব ব্যানারে লেখা থাকলেও বাস্তবে তা হচ্ছে কোথায়? মুর্শিদাবাদ জেলা সহ রাজ্যজুড়ে ব্লক পরিচালনায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কে গুরুত্ব দিয়ে বেছে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার ব্লক সভাপতির তালিকা প্রকাশ হতেই রাজ্যজুড়ে ব্লক এবং জেলা নেতৃত্বের মধ্যে অসন্তোষ লক্ষ্য করা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলাও তাতে পিছিয়ে নেই। জঙ্গিপুর ও বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা মিলিয়ে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের মোট ৩২ জন ব্লক সভাপতির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বুধবার। সংগঠন পরিচালনায় সুবিধা হবে ভেবে কয়েকটি ব্লককে ভেঙে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তবে এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। ৩২ জন ব্লক সভাপতির মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্য আছেন চারজন। পাশাপাশি সুতি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামী সিরাজুল ইসলাম ওই ব্লকের সভাপতি। পাশাপাশি জেলা পরিষদ থেকে ব্লক সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে নির্বাচিত সদস্যদের। জেলা পরিষদের ৯ সদস্য ব্লক পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। অন্যদিকে ভগবানগোলা-২ ব্লকের জেলা পরিষদ সদস্যা শাহানাজ বেগমের স্বামী আব্দুর রউফ ব্লক সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে পুনর্বহাল রয়েছেন। জেলা পরিষদ সদস্যদের পাশাপাশি তিন কর্মাধ্যক্ষকেও ব্লক সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভগবানগোলা-১ ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ রিয়াত হোসেন সরকারকে, নওদা ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শফিউজ্জামান শেখ, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান কে দেওয়া হয়েছে ভরতপুর-২ ব্লকের দায়িত্ব। অন্যদিকে জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যকে ব্লক সভাপতি করতে গিয়ে লালগোলার ব্লক সভাপতি তথা দলের প্রথম দিকের সদস্য দিলসাদ আলিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দলে বারংবার ঘোষণা হয়েছে এক ব্যক্তি এক পদ, কিন্তু তা মানে হচ্ছে কোথায়? দলের পরিচালনার দায়িত্ব এভাবে নির্বাচিত সদস্যদের হাতে তুলে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে দলের সংগঠনকে দুর্বল করে দেওয়া হচ্ছে। সুযোগ পেলে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি তুলে ধরব।’ নওদার বিধায়ক শাহিনা মমতাজ খান বলেন, ‘যারা নির্বাচনে জয়লাভ করেছে তারা তো একটা দায়িত্বে আছেন, ফের তাদের কেনো বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হল? অবশ্যই এ ব্যাপারে বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার ডেভিড বলেন, ‘এই তালিকা রাজ্য থেকে প্রকাশ হয়েছে, তাই এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’কিন্তু যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে জোরদার প্রচার চালিয়েছে, সেখানে জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে ব্লক সভাপতি বেশিরভাগ টাই নির্বাচিত সদস্য। সেখানে তৃণমূল শুধুমাত্র ব্যানারেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ স্লোগান তুলেছিল? প্রশ্ন তুলেছে দলীয় কর্মীদের একাংশ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct