আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। উপত্যকাটির সর্বত্রই এখন খাবারের জন্য হাহাকার। সেখানে খাবার-পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সংঘাতের কারণে কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তাও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। গাজায় মানবিক সঙ্কট পৌঁছানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। সেখানে যুদ্ধবিরতি না হলে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কিন্তু যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে নতুন করে কোনো চুক্তিও হচ্ছে না। এমনকি ইসরায়েল বলছে তারা এখনই লড়াই থামাবে না।
সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই যুদ্ধ আরও কয়েক মাস চলবে। হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গাজাবাসীর জন্য যে সহায়তা সামগ্রী পেঁছে দেওয়ার কথা সেগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর একগুয়েমির কারণে মিশর-গাজা সীমান্তের একটি গুদামে রাখা হয়েছে। ওই গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন বলেন, এই গুদামের পরিস্থিতি স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ দিচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ২২ হাজার ৭২২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। আহত হয়েছে আরও ৫৮ হাজার ১৬৬ জন। এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এখন বসবাসের অযোগ্য। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার পর গাজা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে গত তিন মাসে গাজা একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, গাজার সর্বত্রই এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেখানকার সাধারণ মানুষ টিকে থাকার জন্য প্রতিদিন নানা রকমের হুমকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে বিশ্ব শুধু এই দৃশ্য বসে বসে দেখছে। মানবাধিকার সংস্থার এই প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ২০ লাখের বেশি মানুষকে সহায়তার এক জটিল দায়িত্ব তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ ইতোমধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহর, রাফাহ এবং মধ্য গাজার কিছু অংশে রাতভর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct