রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: মৃত শিক্ষকের দেহ কে নিয়ে যাবে? সামসেরগঞ্জের কোহেতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ নিয়ে তিন স্ত্রীর বাদানুবাদ। রাতভোর চললো কথা কাটাকাটি। অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে সকালে মিললো সুরাহা। বৃহস্পতিবারই সকালেই সামশেরগঞ্জের রতনপুর স্টেশন মোড় এলাকা থেকে বিহারের মধুবনী জেলার বলরামপুর থানা এলাকায় প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া হলো শিক্ষক রাজিন্দর মাহাতোর মৃতদেহ। রাতভোর নাটকীয় কাণ্ড এবং সকালেও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ থানার রতনপুর স্টেশন মোড় এলাকায়। মৃত ওই শিক্ষকের নামে রাজিন্দর মাহাত (৫৮)। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার রাজ্যের মধুবনী জেলার বলরামপুর থানা এলাকার শিক্ষক রাজিন্দর মাহাত। প্রায় ৩০ বছর ধরে সামশেরগঞ্জের কোহেতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। ওই শিক্ষকের তিনজন স্ত্রী বলেই দাবি পরিবারের। প্রথম পক্ষের স্ত্রী সঙ্গীতা মাহাতোর বাড়ি বিহার রাজ্যের মধুবনি জেলার জঞ্জারপুর। তাদের এক মেয়ে এবং দুই ছেলেও রয়েছে। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ডলি মাহাতোর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুর। তারও এক সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি বছর কয়েক আগে সামশেরগঞ্জ ব্লকেরই ঘোষপাড়ার বন্দনা সাহা নামে আরো একজনকে বিবাহ করেন তিনি। প্রথম দুই স্ত্রীর সঙ্গে না থাকলেও ছোট স্ত্রী বন্দনা সাহা মাহাতোকে নিয়েই সামশেরগঞ্জের রতনপুর স্টেশন মোড় এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শিক্ষক রাজেন্দর মাহাতো। হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ মারা যান শিক্ষক রাজিন্দর মাহাতো। তারপরই শুরু হয় আসল রহস্য। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকলেও মৃত্যুর খবর পেয়েই ছুটে আসেন অন্য স্ত্রীরা। সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ছোট স্ত্রীর বচসা বাঁধে। তাকে সবকিছু লিখে দিয়েছে বলেও দাবি করেন ছোট স্ত্রী। যদিও ছোটকির সেই দাবি মানতে নারাজ দ্বিতীয় স্ত্রী। খবর পেয়ে রাতেই বিহার থেকে ছুটে আসেন বড় স্ত্রীও। মৃত শিক্ষকের প্রকৃত ওয়ারিশ কে হবেন? প্রথম, দ্বিতীয় নাকি তৃতীয় স্ত্রী? কে নিয়ে যাবেন তার মৃতদেহ? সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারাই বা কি হবে? তিন স্ত্রীর এই বচসা থানা পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে থানার হস্তক্ষেপে মৃত শিক্ষকের মা সহ পরিবারের আবেদনে বিহারের মধুবনীর বলরামপুর থানা এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct