মুদাসসির নিয়াজ, কলকাতা, আপনজন: সাপ্তাহিক ‘মীযান’ পত্রিকার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রবিবার পার্কসার্কাসের সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসেয়েশন হল-এ এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মীযান পত্রিকা ৫০ বছর অতিক্রম করে ৫১ বছরে পদার্পণ করেছে। প্রোগ্রাম শুরু হয় মাওলানা এএফএম খালিদ সাহেবের তাযকির বিল কুরআনের মাধ্যমে। প্রারম্ভিক ভাষণে মীযান এর সম্পাদক ডা. মসিহুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার আগে-পরে অনেক পত্র-পত্রিকা তৈরি হয়েছে। অনেকে খুব ভালভাবে সময়োপযোগী কাজও করেছে। আবার অনেক পত্র-পত্রিকা কালের স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে। ইসলাম ও মিল্লাতের স্বার্থে সচেতনতা, সঠিক দিশা ও দৃষ্টিকোণ, পথ নির্দেশনা দিতেই মীযান এর পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। ৫০ বছর পরে আজও এই পত্রিকা সাধ্যমতো ইসলামী চেতনা, আদর্শ ও মূল্যবোধের ছাপ রেখে চলেছে।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষামন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের মধ্যে লেখার যে বৈশিষ্ট্য লেখার বিষয়টি অতীতকারেল সময় থেকে চলে আসছে। এমনকী ইসলাম বলছে, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ করে থাকে দুই ফিরিশতা কেরামন কাতেবিন। তারা খাতায় লিখছেন। তিনি বলেন, নবী মুহাম্মদ সা. যন মিরাজে গিয়েছিলেন, তখন নিজের কানে শুনেছিছিলেন ফিরিশতারা খসখস করে লিখছিলেন। আল্লাহর আরশেও কলমে লেখা হয়। তিনি বলেন, ইতিহাসকে ধরে রাখার জন্য লেখাপড়ার চর্চা করতে হবে।
তিনি বলেন. রাজ্যে প্রায় ৩৩ শতাংশ মুসলমান। সাড়ে ৩৮ হাজার গ্রামের মধ্যে সাড়ে ৩৪ হাজার গরামে মুসলিমরা বসবাস করে। মন্ত্রী আরও বলেন, মুখের বাষা হারিয়ে যায়, কিন্তু লেখনী থেকে যায় চিরকাল। মাওলানা িসদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। একে অপরের ভুল না ধরে বিভেদ ভুলে সবাই এগিয়ে এসে মুসলিম সমাজকে সংঘবদ্ধ হওয়অর যাক দেন। বিশেষ অতিথি রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান তথা পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান বলেন, জলপাইগুড়ির বানারহাট হাইস্কুলে স্কুল ম্যাগাজিনের সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে লেখার হাতেখড়ি হলেও সংবাদমাধ্যম ‘মীয়ান’-এর তার সাংবাদিকতা জীবনের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। স্মৃতিচারণায় মীয়ানের অবদানের ক্ষেত্রে তিনি নুরুল ইসলাম খান, ফাত্তাহ সাহেব, জাফর সাহেব, আলাউদ্দিন মোল্লা, আবুল হান প্রমুখদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। মীযানের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুহাম্মদ নূরুদ্দিন বলেন, ফিলিস্তিনে মাস দুয়েকের যুদ্ধে যত সাংবাদিককে ইজরায়েলি বাহিনী হত্যা করেছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিআইপিটির ট্রাস্টি মাওলানা তাহেরুল হক বলেনন, সংবাদপত্র পরিচালনায় আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক সময় বিজ্ঞাপন ছাপতে হয় অপরাগ হয়ে যেগুলো নীতির সঙ্গে মেলে না। সেটাই পাঠকদের বুঝতে হবে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রফিক, বিআইপিটি-র সেক্রেটারি রহমত আলি খান, সেখ নাসির উদ্দীন, মীযান এর প্রকাশক সেখ নাসিম আলি, শাদাব মাসুম, অনন্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এস. নওয়াজ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: মেহেদী হাসান প্রমুখ। এদিন অন্যান্য বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আপনজন পত্রিকার সম্পাদক জাইদুল হক, নতুন গতি পত্রিকার সম্পাদক এমদাদুল হক নূর, বুলবুল পত্রিকার সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম, বাংলার রেনেসাঁ পত্রিকার সম্পাদক আজিজুল হক, জনতার আদালত পত্রিকার সম্পাদক মত্প্রিউর রহমান, প্রাবন্ধিক সোনা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এদিন প্রায় ৫০ জন লেখক, সাংবাদিক, সম্পাদককে সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন অনন্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পী ফারুক আজম, সাদিকুর রহমান প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নূর আলম মোল্লা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct