সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি: নামকরা এক বড় জলাশয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে ভরাট হয়ে ধীরে ধীরে দখল হয়ে পরিণত হচ্ছে কৃষি জমিতে। কিন্তু কিছুতেই হুঁশ ফিরছে না প্রশাসনের। চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে ক্ষুদ্ধ পরিবেশ প্রেমী থেকে শুরু করে স্থানীয় কৃষকরা। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা -১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের আংরাভাসা এলাকার ঘটনা।
অভিযোগ, চাচার বিল নামে একটি বড় জলাশয় প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে দীর্ঘসময় ধরে খনন কাজ না করার কারণে বর্ষায় পলি মাটি পড়ে ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে যাচ্ছে জলাশয়টি। সেই সুযোগেই দখল হয়ে যাচ্ছে জলাশয়। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এলাকার কৃষকদের। জলের অভাবে অনেক কৃষক বর্তমানে পাট চাষ থেকে সরে এসেছে।
উল্লেখ্য, সরকারি এই জলাশয়ে একটা সময় সারাবছর জল থাকত। কৃষকেরা চাষের জমিতে সেচ করার জন্য সেই জল ব্যবহার করত। পাশাপাশি শীতকালে প্রচুর পরিমাণে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভিড় জমাত এই জলাশয়টিতে। বর্তমানে পুরোটাই অতীত। কারণ বর্ষায় দু-মাসের বেশি আর জল থাকছে না। তাই শীতকালে আর আসছে না পরিযায়ী পাখিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও এলাকার পঞ্চায়েতের দাবি, প্রশাসনকে জানানোর পরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই আজ এভাবে জলাশয়টি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সেই সুযোগেই অসাধু কিছু চাষী দখল করে চাষবাস শুরু করেছে। পরিযায়ী পাখিরাও জল না থাকার কারণে বহুদিন আগে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই পরিবেশপ্রেমী থেকে শুরু করে স্থানীয় কৃষক ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সকলেই চাইছেন পুনরায় জলাশয় টিকে খনন করে দখলমুক্ত করে প্রশাসন আগের চেহারা ফিরিয়ে দিক।
এলাকার কৃষক তাহের আলী জানান, একটা সময় সারাবছর এই জলাশয়টিতে জল থাকত। কৃষকরা চাষের জমিতে সেচের জন্য এই জল ব্যবহার করতো। পাট চাষীরা এই জলাশয়ে পাট পচাত। প্রশাসনের তরফে সংস্কার না করার কারণে ভরাট হয়ে গিয়েছে জলাশয়টি, তাই বর্ষার দুমাস ছাড়া জল থাকছে না ।পাশাপাশি দখল হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। জল না থাকার কারণে শীতকালে আগের মত পাখিরাও আসছে না। আমরা চাই জলাশয়টি খনন করে আগের রূপে ফিরিয়ে আনুক প্রশাসন।
এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাফর আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে কৃষকরা তার কাছে অভিযোগ করেছে। এবিষয়ে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন যাতে খনন করে আগের রূপ ফিরিয়ে দেওয়া যায়।
এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত উপ-প্রধান গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের ব্যর্থতার কারণে আজকে জলাশয়টি এভাবে দখল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এর আগে বহুবার তৎকালীন ধূপগুড়ি ব্লক থাকাকালীন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিককে জানিয়েছিলাম তিনি কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বর্তমানে বানারহাট ব্লক এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাফর হোসেন তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করলে সেটি খনন করা যাবে।
এ বিষয়ে ধূপগুড়ি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক জয়দেব ঘোষ কে টেলিফোন করা হলে বলেন তিনি গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct