আপনজন ডেস্ক: ঘরের মাঠে অন্যতম সেরা। তবে দেশের বাইরে গেলে একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্যই কঠিন লড়াই করতে হয়। পরিসংখ্যানও বলছে, ক্রিস ওকস দেশের বাইরে সেরাটা দিতে পারেন না। সে কারণেই ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের স্কোয়াডে জায়গা পাননি এই অলরাউন্ডার।অথচ গত জুলাইয়ে সর্বশেষ অ্যাশেজেই সিরিজ–সেরা হয়েছিলেন ওকস। অ্যাশেজে দারুণ কিছু করার পরও ভারত সিরিজের জন্য ওকসের ওপর ভরসা রাখতে পারেননি ইংল্যান্ডের নির্বাচকেরা। আর এমন সিদ্ধান্তকে খোদ ওকসই বলছেন ন্যায্য। ওকসও এ ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানেই আশ্রয় খুঁজেছেন। ওকস বলেছেন, ‘(ভারত সফরে সুযোগ না পাওয়ার) অনুভূতি মিশ্র। যখনই কোনো টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে জায়গা পেতে মরিয়া থাকি। পাশাপাশি আমার এই বয়সে... এ ছাড়া দেশের বাইরে আমার যা রেকর্ড, বিশেষ করে উপমহাদেশে আমার মনে হয়, এটা ন্যায্য সিদ্ধান্ত।’ ৪৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে ওকস দেশের বাইরে খেলেছেন ২০টি ম্যাচ। দেশের মাঠে ২৮ টেস্টে তাঁর উইকেট ১১৩টি, বোলিং গড় ২১.৮৮। সেখানে দেশের বাইরে ২০ টেস্ট খেলে তাঁর উইকেট মাত্র ৩৬টি। বোলিং গড় ৫১.৮৮। দেশের মাটিতে ৫ উইকেট নিয়েছেন পাঁচবার। আর দেশের বাইরে ৫ উইকেট নেই একবারও। ব্যাটিংয়েও দেশের মাঠে একটি শতক ও পাঁচটি অর্ধশতক ওকসের। ৩৩.২৫ গড়ে রান ১০৩১। দেশের বাইরে ৩৭ ইনিংসে অর্ধশতক মাত্র একটি, ব্যাটিং গড় ২১.৯০, মোট রান ৭২৩। আর ভারতে ৩ টেস্ট খেলে তাঁর উইকেট মাত্র তিনটি। ১৪ গড়ে ৫ ইনিংসে রান মাত্র ৭০। দেশের বাইরে ওকস ভালো খেলেছেন নিউজিল্যান্ডে ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২০১৯ ও ২০২০ সালের এই দুটি সফরকে অবশ্য ব্যতিক্রম হিসেবেও ধরা হয়। সর্বশেষ ওকস দেশের বাইরে খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেবার জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে বাদ দিয়ে মূল পেসার হিসেবে রাখা হয়েছিল ওকসকে। কিন্তু ৩ টেস্টে ৪৮.৮০ গড়ে উইকেট নিয়েছেন পাঁচটি। এ কারণেই গত জুলাইয়ে অ্যাশেজে ৩ টেস্ট খেলেই ১৯ উইকেট শিকার করা ওকসের ওপর ভারত সফরে আস্থা রাখতে পারেননি ইংল্যান্ড নির্বাচকেরা। ভারত সফরের দলে না থাকাটাই নিজের জন্য ভালো হয়েছে বলে মনে করেন ওকস। তিনি বলছেন, ‘আমি মনপ্রাণ উজাড় করেই বল করেছিলাম (ওয়েস্ট ইন্ডিজে), তবে শরীর নিয়ে ধুঁকেছি। ওই সময়টায় হাঁটুতে যন্ত্রণা ছিল। ওই সফরের পরই আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল এবং ছয় মাস ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল।’
ওকস এরপর যোগ করেন, ‘ভারতে গিয়ে আমার বোলিংয়ের জন্য প্রতিকূল উইকেটে বোলিং করা আর সামনের হাঁটুর ওপর অনেক চাপ দেওয়াটা এই ৩৪ বছর বয়সে আদর্শ নয়। যেহেতু সামনের দিনগুলোতে সাদা বলের ক্রিকেটে অনেক খেলতে চাই। যদি একটি সংস্করণেই মনোযোগ থাকে, তাহলে ব্যাপারটি ভিন্ন। কিন্তু সব সংস্করণে খেলার জন্য এটি বিচক্ষণ একটি সিদ্ধান্ত।’ টেস্টে ঘরের মাঠে বিশেষজ্ঞ হয়ে যাওয়া এই পেসারের দাবি, তাঁর চেষ্টায় কমতি ছিল না, ‘আগেও অনেকবার বলেছি। এটা কম চেষ্টার ফলে হয়নি। কারণ, সাদা বলে আমার দেশের বাইরের রেকর্ড ঘরের মাঠের চেয়ে ভালো। তাই এটা শুধু কন্ডিশনের বিষয় নয়। কিন্তু লাল বলে আমার পথচলাটা কঠিন ছিল, এটা হতাশাজনক।’ নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ওকসের। নির্বাচকদের সিদ্ধান্তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন এই অলরাউন্ডার, ‘সামনে আমার সেরাটা কোথায় খেলতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমাদের এবং টেস্ট ক্রিকেটে নিশ্চিতভাবেই তা ঘরের মাঠে। এটির মানে এই নয় যে উপমহাদেশের বাইরে অন্য সফরগুলোয় আমাকে পাওয়া যাবে না। তবে এ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্তে আমি স্বচ্ছন্দই আছি এবং এর যৌক্তিকতা আছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগটা ছিল খুবই ভালো। আমি জানি ক্যারিয়ারের কোথায় দাঁড়িয়ে আছি এবং আমার এতে কোনো সমস্যা নেই।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct