আমীরুল ইসলাম, বোলপুর, আপনজন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা করবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল প্রশাসনিক ভবনে বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত ছিল যে পূর্বপল্লী মাঠ চাওয়া আবেদন করবে বিশ্বভারতী কে। মাঠ না দিলে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে পৌষ মেলা করবে বীরভূম জেলা প্রশাসন জানিয়েছিলেন বীরভূম জেলা শাসক। কিন্তু আজ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবিত পৌষ মেলা বোলপুর মহকুমা প্রশাসনের পক্ষে বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে আয়োজন করার বিষয়ে সভা। বিশ্বভারতী অনুমতি দেওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে মহূকুমা প্রশাসনের উপর শর্ত আরোপ করেন। সেই শর্তের আশ্বাস পেলে বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সত্য গুলি হল গ্রিন টারবুনাল পৌষ মেলার আয়োজনে যে শর্তগুলি বেঁধে দিয়েছে তা রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না। বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যেহেতু এ বছর পৌষ মেলার আয়োজন করছে না, তাই ওই মেলা প্রাঙ্গণে বোলপুর মহকুমা প্রশাসন মেলার আয়োজন করলে যদি কোন আইনি জটিলতা তৈরি হয় তা জেলা প্রশাসন সমস্ত দায়িত্ব গ্রহন করতে সম্মত হবে কিনা এও জানান। বিশ্বভারতী সংস্কৃতি এবং নান্দনিক রুচির সঙ্গে সংগতি রেখে এই মেলা অনুষ্ঠিত করতে হবে। গ্রীন ট্রাইবুনাল নির্দেশ মতো নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর মেলা শেষ করে মেলার মাঠটি পরিষ্কার করে মহকুমা প্রশাসন বিশ্বভারতীকে পূর্বস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। মেলা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় বোলপুর মহকুমা প্রশাসন বহন করতে পারবে কি না জানাতে হবে।
মেলা প্রাঙ্গণে মেলা করার জন্য বিশ্বভারতী অনুমতি ছাড়া মেলার জন্য প্রয়োজনীয় বাকি যাবতীয় অনুমতি বোলপুর প্রশাসন নিজের উদ্যোগে নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি মেলা চলাকালীন বিশ্বভারতী ছাত্র-ছাত্রী অধ্যাপক কর্মীসহ সামগ্রিক নিরাপত্তা ও পটন পাঠনের পরিবেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুনিশ্চিত করতে হবে। ২০১৯ সালের মেলা শেষে নির্ধারিত সময়ে মাঠ ফাঁকা করতে গিয়ে বিশ্বভারতী কর্মীদের নানান আপত্তিকর পরিস্থিতি সম্মুখীন হতে হয় যা শেষ পর্যন্ত শান্তিনিকেতন থানায় কয়েকটি মামলা হিসাবে নথিভুক্ত হয় এই মামলাগুলোর জন্য বিশ্বভারতী কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে বিশ্বভারতী সঙ্গে জেলা প্রশাসনের সুসম্পদ কখনো প্রতিষ্ঠিত করে ওই মামলা গুলি নিষ্পত্তির মাধ্যমে আমাদের কর্মীদের মনোবল ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে এ বছর পৌষ মেলা সহায়ক হতে পারবে কিনা তাও দেখার প্রয়োজন। যদিও ইতিপূর্বে শান্তিকেতন ট্রাস্ট মেলা প্রাঙ্গনে মেলা করার জন্য বিশ্বভারতী কে কুড়ি হাজার টাকা প্রদান করে বিশ্বভারতী কৃতজ্ঞভাজন হয়ে এসেছে অন্তত সেই পরিমাণ অর্থ মেলা প্রাঙ্গনে ব্যবহার করা বাবদ মহূকুমা প্রশাসন বিশ্বভারতী কে প্রদান করার কথা বিবেচনা করতে পারে। ওপরে উক্ত এই কয়েকটি শর্ত আশ্বাস পেলে শুধুমাত্র এই বছরের জন্য বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে বোলপুর মহা প্রশাসনকে মেলার আয়োজন করতে দেবার বিষয় বিশ্বভারতী কোন আপত্তি নেই। যদিও সময় অল্প এই সময়ের মধ্যে উপরে উক্ত শর্ত পালন করা সম্ভব নয় তাই এ বছর বীরভূম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ডাকবাংলা ময়দানে পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct