আজিজুর রহমান, গলসি, আপনজন: নিম্নচাপের অকালবৃষ্টিতে পাকা ধানে মই। ক্ষতিগ্রস্থ রাজের বিভিন্ন জেলা। একই সাথে ক্ষতির মুখে পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ও ২ নং ব্লকের বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। আর এর জেরেই চিন্তায় পরেছেন বেশিরভাগ চাষি। গলসি ১ নং ও ২ নং ব্লকের অধিকাংশ মৌজায় মাঠে এখনও জমে রয়েছে জল। বহু জমিতে পাকা ধানের শীষ নুইয়ে পরেছে। এমন চিত্র দেখে হতাশ চাষিরা। এদিকে জমিতে জল জমার জন্য সরিষা, সবজি, আলু ও পেঁয়াজ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। জানা গেছে, মাঠের ধান পাকতে শুরু করায় গলসির দুটি ব্লকের বিভিন্ন মৌজায় ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। আর কাটা শুরুতেই নিম্নচাপের বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে গেছে ধান জমি। এমনকি মাঠে কাঁটা ধানের শীষ জলের নিচে ডুবে রয়েছে। ফলে ওই ধানে অঙ্কুর হবার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এমন অবস্থা দেখে বেশ চিন্তায় পড়েছেন এলাকার হাজার হাজার চাষি। স্থানীয় চাষী গিয়াস চৌধুরী, গুলজার সেখ, বাপ্পা ঘোষরা জানিয়েছেন, তারা ব্যাংকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন। ফলন মোটামুটি ভালই ছিল। সেই মতো ধানও কাটা শুরু করেছিলেন তারা। তবে আচমকা নিম্নচাপের বৃষ্টিতে তাদের মতো বহু চাষি ক্ষতি মুখে পরেছেন। এমন অবস্থায় তারা সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। চাষি আনিসুর মল্লিকের দাবি, ধান কাটার সময় আবহাওয়া ভালো ছিল। তাই তিনি ধান কাটা শুরু করছেন। এখন সাত বিঘা জমির ধান মাঠে কাটা আছে। দুইদিন বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে জল জমে গেছে। ফলে কয়েক বিঘা জমির কাটা ধান জলে ডুবে আছে। ধানের শীষের উপরে জল পড়ায় তা ভারী হয়ে নুইয়ে পড়েছে জমিতে। ফলে বেশিরভাগ জমির ধান ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তার মতো অসংখ্য চাষি। ছোট, মাঝারি, প্রান্তিক চাষির সাথে সাথে ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভাগচাষিরা। বুদ্ধদেব বাগদি নামে এক ভাগ চাষী বলেন, তিনি প্রতিবছর কয়েক বিঘা জমি ভাগে চাষ করেন। আগে কয়েক বছর লস করেছেন। তবে এবারে লাভের আশা করেছিলেন। বর্তমান অবস্থায় আর লাভ হবেনা বলে জানান তিনি। এদিকে দামোদর নদের আশেপাশ সহ গলসি এলাকার বহু জমিতে সরিষা, শাকসবজি, আলু, পেঁয়াজ এর চাষ করা হয়েছে। জলের জন্য সেইসব চাষিরাও চিন্তায় পরেছেন। এমন অবস্থায় রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করছেন চাষিরা। তাদের দাবী চাষীদের সুরক্ষা দিয়ে পাশে দাঁড়াক সরকার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct