সজিবুল ইসলাম, ডোমকল, আপনজন: সাগরপাড়ায় পুরোনো আক্রোশের জেরে এক বন্ধুকে কোপানোর অভিযোগ উঠলো অপর এক বন্ধুর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় সাগরপাড়ার খইরামারী এলাকায়। জখম ব্যক্তি বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তদন্তে নেমে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ‘বন্ধু’কে গ্রেপ্তার করেছে সাগরপাড়া থানার পুলিস।স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে , সাগরপাড়ার খইরামারী টিকটিকিপাড়ার ইয়ারুল শেখ ও জলঙ্গির দক্ষিণ ঘোষপাড়ার জাহিদুল মন্ডল একে অপরের বেশ পরিচিত এবং একসময়ের বন্ধু ছিল। তবে এখন আর তাদের সেভাবে যোগাযোগ ছিল না। শুক্রবার ইয়ারুলের গ্রাম, টিকটিকিপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন জাহিদুল। এরপরে মাঠের দিকে ঘুরতে গিয়ে ইয়ারুলের সঙ্গে দেখা হয় তার। কিছুক্ষন ধরে কথা চলে তাদের মধ্যে। কথা চলাকালীন হঠাৎই বচসা শুরু হয় দুজনের মধ্যে। আর সেই বচসা চলাকালীন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো হাসুয়া দিয়ে অতর্কিতে জাহিদুলবাবুকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে ইয়ারুল। ইয়ারুলের ধারালো হাসুয়ার কোপে হাত থেকে তিনটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জাহিদুলের। তারপরেও থেমে থাকেনি ইয়ারুল। নিজের হাতে থাকা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে জাহিদুলের মাথা, পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একের পর কোপ দিতে থাকে। ধারালো অস্ত্রের কোপে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জাহিদুল । তার গোঙানির শব্দ শুনে আশেপাশের মানুষেরা ছুটে এসে দেখে রক্তে ভেসে গিয়েছে চারিদিক। রক্তাক্ত অবস্থায় জমির ক্ষেতের মধ্যে ছটপট করছে জাহিদুলবাবুর ক্ষতবিক্ষত দেহ। ভিড়ের মধ্যে সুযোগবুঝে তখনই চম্পট দেয় ইয়ারুল। এরপরে স্থানীয়রা তড়িঘড়ি জাহিদুলকে উদ্ধার করে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে তৎক্ষণাৎ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় সাগরপাড়া থানার পুলিস। তদন্তে নেমে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইয়ারুলকে । কি কারণে জাহিদুলের ওপর হামলা চালালো ধৃত, তা নিয়ে এখনও পুলিসের তরফ থেকে স্পষ্ট করে কিছু না বলা হলেও, নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ওরা দু’জন পূর্ব পরিচিত এবং বন্ধু ছিল। এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেমে যা জানতে পারে যাচ্ছে তাতে পুরোনো কোনও বিষয় নিয়ে বিবাদ ছিল তদের মধ্যে । আর সেই বিবাদের কারণে আক্রোশের জেরেই জাহিদুলকে কুপিয়েছে ইয়ারুল। এর আগেও ইয়ারুলের নামে কোপানোর ক্রাইম রেকর্ড রয়েছে। তদন্তে নেমে আমরা ইতিমধ্যেই ইয়ারুলকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।জখমের আত্মীয় মেরিনা বিবি বলেন, ইয়ারুলের কোনও সমস্যা নেই ও সবাইকে এভাবেই মেরে বেড়ায়। এর আগেও ইয়ারুল ওর নিজের এক আত্মীয়কে এভাবেই কুপিয়েছিল। এরপরে আজকে আবার জাহিদুলকে সুযোগ পেয়ে মারল । ওর শাস্তি চাই।অভিযুক্তের স্ত্রী মুর্শিদা বিবি বলেন, আমার স্বামী মাঝে মধ্যেই ঝামেলা করে। ও নেশা করে থাকে সবসময়। বাড়িতেও আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করে। আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি। আমিও ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct