সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন চলল শুক্রবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ইডিকে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়, এমনটাই ইডি সূত্রের খবর। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে ছাড়া যাবে না এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে এমনটাই জানিয়ে দিল, এসএসকেএম হাসপাতাল খবর সূত্রে খবর । অপরদিকে ইডি-র তরফ থেকে হাসপাতালকে বলা হয়েছে যেহেতু কালীঘাটের কাকুকে ছাড়া হচ্ছে না যাবতীয় রিপোর্ট, তার আগের মেডিকেল রিপোর্ট এবং বর্তমান মেডিক্যাল রিপোর্ট দিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে ব্যাখ্যা দিতে হবে। কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন এত টালবাহানা লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে।
শুক্রবার দীর্ঘক্ষণ প্রতীক্ষার পর জোকা ইএসআই হাসপাতাল থেকে আসা ফাইভ-জি ক্ষমতা সম্পন্ন এম্বুলেন্স গাড়ি ফিরে গেল এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে টানা ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যেতে শুক্রবার ব্যর্থ হল ইডি। শুক্রবার সকালেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন ইডি কর্তারা। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সও। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রে খবর মেলে, আচমকাই ‘কাকু’র শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে কেবিন থেকে সরিয়ে হৃদ্রোগ বিভাগের আইসিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। যার ফলে তাঁকে আদৌ ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। শেষ পর্যন্ত, ‘কাকু’কে না নিয়েই ফিরে যেতে হল ইডিকে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ এসএসকেএম থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় ইডির নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্সটিকে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারী আধিকারিক মিথিলেশ কুমার মিশ্র বলেন, ‘‘সব বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, শুক্রবারই সুজয়কৃষ্ণের গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠাতে চেয়েছিল এজেন্সি। নিয়োগ মামলায় সুজয়কে গ্রেফতার করে ইডি। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর গলার স্বরের নমুনা অনেক দিন ধরে সংগ্রহ করার চেষ্টা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু বার বার তাতে বাধা আসছে বলে অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও ইডি প্রশ্নও তোলে। অন্য দিকে, এসএসকেএম থেকে জানানো হয়েছে, গলার স্বরের নমুনা দিতে প্রস্তুত নন সুজয়। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তাই তাঁর স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি এত দিন।সুজয়কৃষ্ণের অসুস্থতা নিয়ে এসএসকেএমের সুপার পীযূষ রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।আদালতের নির্দেশে ‘কালীঘাটের কাকু’র স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাই জোকা ইএসআই হাসপাতালে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত সেই বোর্ড বিবেচনা করে দেখবে, আদৌ সুজয় গলার স্বরের নমুনা দিতে শারীরিক ভাবে প্রস্তুত কি না।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সুজয়কে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে আগে মেডিক্যাল বোর্ড তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবে। যদি তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দেন, তবেই সংগ্রহ করা যাবে ‘কাকু’র গলার স্বরের নমুনা। প্রসঙ্গত, নিয়োগ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ইডি একটি বিশেষ অডিয়ো রেকর্ডিং পায়। সেখানে সুজয়ের গলার স্বর শোনা গিয়েছে বলে দাবি। কিন্তু তা প্রমাণসাপেক্ষ। সেই কারণেই সুজয়ের গলার স্বরের সঙ্গে ওই নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। শুক্রবার সেই নমুনা সংগ্রহ করা গেল না। কার্যত ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করে খালি হাতে খালি এম্বুলেন্স নিয়ে ফিরতে হল ইডি অফিসারদের।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct