সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি, আপনজন: দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আরও একটি চাকরি নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হল জলপাইগুড়িতে। কয়দিন পরীক্ষার জন্য যতটা না আনন্দে ছিলেন পরীক্ষার্থীরা, তার থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় তারা। সেটা তাদের মুখে মুখে এবং কথাতেই পরিস্কার। কারণ এর আগে রাজ্যে একাধিক চাকরিতে নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে নানান ধরনের। কখনো টাকা দিয়ে চাকরি বিক্রির অভিযোগ, কখনো নিজের পরিজনদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ। আর বর্তমানে রাজ্যে সব থেকে বড় চাকরিতে নিয়োগ নিয়ে স্ক্যাম হয়েছে শিক্ষক নিয়োগে। আর তাই দুশ্চিন্তায় রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার আইসিডিএস কর্মীর পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিজনরা। সকলেই চাইছেন স্বচ্ছ নিয়োগ হোক, যোগ্যরা চাকরি পাক। এমনই কথা জানালেন পরীক্ষা দিতে যাওয়া পরীক্ষার্থী থেকে তার অভিভাবকরা।জলপাইগুড়ি জেলায় আজ মোট ৪১৫৪২ জন পরিক্ষার্থী আইসিডিএস কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় বসেছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় মোট শূন্যপদ রয়েছে ৩১৮ টি বলে সূত্রের খবর।
যারা ২০১৯ সালে আইসিডিএস কর্মীর পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। এতদিন নানান আইনি বেড়াজালে আটকে ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। পরীক্ষা শুরু হলেও দুশ্চিন্তার মেঘ কাটেনি পরীক্ষার্থীদের মন থেকে, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসে আশাবাদী থাকলেও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কারণ যেভাবে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন রাজ্য সরকার সে জায়গায় দাঁড়িয়ে পরীক্ষার্থীদের মনে দুশ্চিন্তা অনেকটাই! পরীক্ষা দিতে আসা এক পরীক্ষার্থী লিপিকা সরকার বলে, আশা নিয়ে পরীক্ষায় বসেছি স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ হবে। দুশ্চিন্তা তবুও মনে আছে। চাকরি মানেই টাকা,বটাকা না দিলে তো আর চাকরি পাওয়া যাবে না। বর্তমানে এটাই নিয়ম হয়ে গেছে। রাজ্য সরকার যেভাবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িয়েছে, চাকরি মানেই টাকা।পরীক্ষা দিতে আসা আরেক পরীক্ষার্থীর শোভা বানু বলেন, ২০১৯ সালে ফর্ম ফিলাপ করেছিলাম। পাঁচ বছর পর পরীক্ষা হচ্ছে।বচাকরি পাওয়ার আশার থেকে দুশ্চিন্তাই বেশি। আমরা চাই স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ হোক।যদিও বিরোধী রাজনৈতিক দলের দাবি লোক দেখানো পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, এক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হবে অথবা ঘুরপথে নেতা তার ঘনিষ্ঠদের পাইয়ে দেবেন চাকরি অথবা মামলা করে আটকে দিবেন নিয়োগ। বিজেপি ধূপগুড়ি বিধানসভা কনভেনার চন্দন দত্ত বলেন, এর আগেও আইসিডিএস এর পরীক্ষা হয়েছিল স্বচ্ছতার সাথে সেখানে নিয়োগ হয়নি । এবারও পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তা লোক দেখানো, আই ওয়াশ মাত্র। এই পরীক্ষাতেও চাকরি টাকার বিনিময় বিক্রি হবে আর তা না হয় শাসক নেতারাই কেস করে নিয়োগ প্রক্রিয়া, ঝুলিয়ে দেবে। লোকসভা ভোটের আগে চমক দেওয়ার চেষ্টা মাত্র।যদিও তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক অরূপ দের দাবী, ২০১৯ সালে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। বিরোধী দলগুলোর চক্রান্তের কারণে সেই সময় পরীক্ষা হয়নি, তাই নিয়োগ হয়নি। আমরা চাই স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হোক সঠিকভাবে পরীক্ষা হোক। কোথাও টাকা পয়সা নিয়ে নিয়োগ হবে না। যেভাবে আইসিডিএস গ্রুপ ডি এর নিয়োগ হয়েছে। সেভাবে স্বচ্ছ ভাবে এই নিয়োগ হবে ।জলপাইগুড়ি ডিপিও আনন্দময় চ্যাটার্জি বলেন, জেলায় ৪১৫৪২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছেন।মোট শূন্য পদ রয়েছে প্রায় ৩১৮ টি। নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা হয়েছে ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct