রুদ্ধতায় একমুঠো শুদ্ধতা
আহমদ রাজু
তুষি শিক্ষিত, ভদ্র একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে সে বাঙালি মেয়ে নয়; ভারতীয় মর্ডান, যাকে বলে উত্তর আধুনিক। বাঙালিয়ানা আর বাংলা ভাষার সাথে তার পরিচয় নেই বললেই চলে। হিন্দি আর ইংরেজি মিশিয়ে কথা বলে। এমন মেয়েকে বাবা কোনভাবেই মেনে নেবে না। তাইতো ঠোঁটের আগায় এসেও বার বার ফিরে গেছে সবার সামনে প্রকাশ করার সত্যটা। আমি কোনভাবেই বাবা-মায়ের মনে কষ্ট দিতে পারবো না। তাতে আমার ওপর দিয়ে যতই ঝড় ঝাপ্টা পেরিয়ে যাক না কেন। বছরখানেক আগেও ভালই ছিলাম। অফিস- বাসা, রবিবারে বন্ধুদের সাথে দূরে কোথাও লং ড্রাইভে হারিয়ে যাওয়া। মাঝে মাঝে দেশে বাবা-মায়ের সাথে ভিডিও কলে কথা বলা। বেশ চলছিল জীবনটা। কী কুক্ষণে যে তুষির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল? তা না হলে আজকে হৃদয় নামক সংবিধানে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হতো না। বেশ ভাল করে মনে আছে, সুজিতই আমাকে তুষির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। রবিবারের এক বিকেলে ওয়েস্ট মিনিস্টার আবেতে আমরা ক’বন্ধু ঘুরতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ সামনে আসে প্যান্ট- শার্ট পরা ছাব্বিশ- সাতাস বছরের একটি মেয়ে। গোলগাল মুখের গড়ন, চোখ দু’টি আতসি কাচের ওপর হালকা সবুজের প্রলেপ যেন। ঘন কালো চুল ঘাড় অবধি রেখে সম্প্রতি ছেটে ফেলা হয়েছে যা দেখলেই বোঝা যায়। বলা নেই কওয়া নেই সুজিত বলল, ‘স্বদেশ এ তুষি, আর তুষি এ....’ ওর কথা শেষ না হতেই মেয়েটি হিন্দিতে বলল, ‘স্বদেশ, তাইতো?’আমিতো হতবাক। মেয়েটির সাথে এই প্রথম আমার দেখা হলো অথচ প্রথম দেখায় সে আমার নাম বলে দিল! আমার মুখের অবস্থা দেখে সে বলল, ‘কী স্বদেশ বাবু, প্রথম দেখায় আপনার নাম আমি জানলাম কীভাবে এইতো ভাবছেন?’আমি মুখটা ঝাঁকিয়ে বললাম, ‘হু।’‘আপনি আসলেই বোকা। এইমাত্র সুজিদ দাদা-ই তো আপনার নাম বললো।’আমি আবারো ধাক্কা খেলাম। বাবা- মা বোকা বলে আমাকে বরাবরই। তাইবলে একজন অপরিচিত মেয়ে বলবে? তাও লণ্ডন শহরে! আমাকে ভাবনার সাগরে নিমজ্জিত হতে না দিয়ে সুজিত বলল, ‘তুষি মহারাষ্ট্রের মেয়ে। সেদিন এসেছে লণ্ডনে।’আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু আছে যারা ভারতীয়। হিন্দিতে কথা বলে। তাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে কমবেশি হিন্দি বলা শিখেছি। এমনকি বুঝতেও কোন সমস্যা হয় না। তাইতো হিন্দিতে তুষিকে উদ্দেশ্য করে বললাম, ‘পড়াশুনা করতে এসেছেন নাকি?’‘বেড়াতে এসেছি।’‘কতদিন থাকবেন?’‘সেটা অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছে না। মনের ওপর নির্ভর করছে। তাছাড়া এ দেশটা আমাকে কতটা গ্রহণ করবে সেটাওতো ভাবা দরকার।’বললাম ‘দেশতো আপনাকে অবশ্যই গ্রহণ করবে। ঘুরে ঘুরে দেখুন, এখানকার চারিদিকে শুধু সৌন্দর্য আর সৌন্দর্য। যা দেখে আপনি শেষই করতে পারবেন না।’‘আপনার সাথে ঘুরলে কোন আপত্তি নেই তো?’ বলল তুষি।আমি হেসে উঠে বললাম, ‘আমার সময় কই? সারাদিন অফিসে ব্যস্ত থাকতে হয়।’‘অফিসের সময় আপনাকে একদম জ্বালাবো না। তারপর আপনার হাতে তো অঢেল সময়।’আমি কেন তাকে কাটছাট কথা বলতে পারছি না, তা বুজে আসে না। সরাসরি বলে দিলেইতো পারি- ‘আমার সময় নেই। আর মেয়েদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর কোন ইচ্ছা আমার ভেতরে জাগ্রত হয়নি- হবেও না আশাকরি।’ কোন এক অদৃশ্য কারণে বলতে পারি না। তবুও মনের সাথে যুদ্ধ করে বললাম, ‘সুজিত আছে, কবির- সোহেল আছে। আপনার কোন অসুবিধা হবে না।’আমাকে স্তব্ধ করে দিয়ে বলল, ‘সবার সাথে কী আর মন মেলে? সে তো ঐশ্বরিক দান।’বলে কী মেয়েটা! আমার একাকিত্ব আছে সেটা অস্বীকার করছি না। এর মানে এই নয় যে, সেই একাকিত্ব দূর করার জন্যে একজন মেয়েকেই বেছে নেবো। কখনও ভাবনায় আসেনি এমন কিছু। এখানে এই কয় বছরে বন্ধু- বান্ধব কম জোটেনি। তাদের সঙ্গে সময়- অসময় ভালইতো কেটে যায়। আমি যে একা সেটা বুঝতে পারি যখন রাতে ক্লান্ত- অবসন্ন শরীর নিয়ে বাসায় ফিরি। কিংবা ছুটির দিন দুপুর বারোটা অবধি ঘুমিয়ে যখন রান্না ঘরে যাই রান্না করার জন্যে। রান্না যে একেবারে পারি না তা নয়, পারি; বেশ ভালই পারি। নিজের কথা বলে বলছি না, অনেককে খাওয়ানোর সৌভাগ্য হয়েছে এতদিন। তারা কেউ খারাপ বলেছে মনে হয় না। তাই বলে রান্না করতে আমার যে ভাল লাগে তা নয়; স্রেফ দায় ঠেকে রাধতে হয়। নয়তো কে যায় পাকের ঘরে?আমার নীরবতা দেখে তুষি বলল, ‘কী হলো, আমার কথায় কী জমে গেলেন? রাজী তো?’ সে আমার দিকে ডান হাত বাড়িয়ে দেয়।ইতস্তত আমি। কী করবো বুঝতে পারছি না। তাছাড়া ওরা সবাই যে আমাদের নিয়েই হাসি তামাশায় মজে আছে তা আর বুঝতে বাকী থাকে না। আমি ওদের দিকে তাকাতেই ওরা চোখ ফিরিয়ে উল্টো দিকে তাকায়। ‘হ্যালো হ্যান্ডসাম, আমি কিন্তু আপনার দিকে হাত বাড়িয়েই রেখেছি।’
তুষি বলল।মন চাইছে হাতটা বাড়িয়ে দিই। তবে বন্ধুরা কী ভাববে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে নিজেকে কুক্ষিগত করে রাখি। এমন সময় সুজিত তার চোখ দুই হাত দিয়ে ঢেকে পা টিপে টিপে কাছে এসে বলল, ‘তুই তো আসলেই একটা বোকা। নিজের ভাল পাগলেও বোঝে। আর তুই কিনা.....।’ওর কথা শেষ না হতেই তুষি বলল, ‘দেখুনতো দাদা, আমার মতো এমন হ্যান্ডসাম সুইট গার্ল তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে রেখেছে আর সে কিনা নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে!’‘স্বদেশ পাগলামোর একটা সীমা আছে। আশাকরি তুই সে সীমা অতিক্রম করবি না।’ বলল সুজিত।‘আমি এখন বুঝতে পারছি তোরা আমাকে জেনেশুনে বিপদে ফেলছিস।’‘তাই যদি বুঝে থাকিস তাহলে হাতটা বাড়াচ্ছিস না কেন?’‘আচ্ছা, হাত বাড়ালেই কী আর না বাড়ালেই বা কী?’‘এসব প্রশ্ন-উত্তরের বহু সময় সামনে পাবি তুই। ধরতো হাতটা চেপে।’ বলে আমার হাত টেনে তুষির হাতের মুঠোর ভেতরে পুরে দেয়। মুহূর্তে আমি যেন এক নতুন আবেশ অনুভব করি। সমস্ত শরীর দুলে ওঠে আমার। কেন এমন হলো তা যেমন বুঝিয়ে বলতে পারবো না, তেমনি সে পরম অনুভূতিও ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় তুষির কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে এই ভুলে যাবার কারণ, গত রাতে বিকেলে পার্কে ঘটে যাওয়া ঘটনা মামুলি বলে মাথা থেকে জোর করেই ঝেড়ে ফেলেছিলাম। তাতে অবশ্য কষ্ট হয়েছিল। ঘুরে ফিরেই তুষির মুখোচ্ছবি ছায়াছবির মতো মনের পর্দায় ভেসে উঠছিল। রাতেই আপন মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তুষিকে নিয়ে কিছুই আর ভাববো না। বেশকিছু কারণ সামনে এসে ধরা দিয়েছিল। দেশে বাবা-মা আমার মুখ চেয়ে আছে। তারা চায়, একজন অতিপ্রাকৃত বাঙালি মেয়েকে বিয়ে করে সংসারী হই। বিয়ের পর বউকে লণ্ডনে নিয়ে গেলেও তাদের কোন আপত্তি নেই। আমিই এতদিন রাজি হইনি। এখন যদি তুষির মতো মর্ডান মেয়েকে নিয়ে কিছু ভাবি তাহলে তারা যে কষ্ট পাবে তা কোনদিন লাঘব করতে পারবো না। উথাল-পাথাল চিন্তা তুষিকে আমার মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে বাধ্য করেছে।বিকেলে যখন অফিস থেকে বের হয়ে আমার গাড়ির দিকে যাই তখন আমিতো অবাক। তুষি আমার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওকে না দেখার ভান করে গাড়িতে উঠতে যাবো এমন সময় আমার হাত টেনে ধরে বলল, ‘হ্যালো মিস্টার, চব্বিশ ঘন্টা পার হতেই প্রিয় মানুষটাকে ভুলে গেলেন?’আমি মুখে কৃত্রিম হাসির রেখা ফুটিয়ে বললাম, ‘দুঃখিত, খেয়াল করিনি।’‘এই একটা শব্দ যে কত সমস্যার সমাধান করতে জানে।’ বলল তুষি।‘মানে?’‘এই যে বললেন সরি। ছোট্ট একটা শব্দ; অথচ দেখুন সব সমস্যাকে কেমন করে তড়িৎ সমাধান করে দেয়।’‘ঠিকইতো।’‘আমি কখন বললাম বেঠিক। শুধু আপনি যে মিথ্যা বলেছেন এটা বেঠিক।’‘বুঝলাম না।’‘আপনি বোঝেন-এবং বোঝেন। শুধু মনের সাথে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে আমাকে ভুলতে চেষ্টা করছেন; তাইতো?’তুষির কথায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই। বললাম, ‘আপনি কিছু মনে করবেন না, আসলেই আমি...’আমার কথা শেষ না হতেই তুষি বলল, ‘আসলেই আপনি সত্যিই বোকা। না হলে আমার মতো একজন রূপবতীকে না দেখে কেউ কি করে অন্য দিকে চলে যেতে পারে?’আমি বুঝতে পারি, তুষি আমার মনের অবস্থা সব বুঝতে পেরেছে। তাইতো কথা না বাড়িয়ে বললাম, ‘আপনার সব কথা মানলাম। এখন আসি তাহলে। আমার কিছু কাজ আছে।’‘কাজ তো থাকবেই। চলুন আমি আপনার সাথে যাবো।’‘আমার সাথে!’‘কেন? এখানে অবাক হবার কী আছে?’‘না তা বলছি না।’
‘তাহলে আর কিছু বলতে হবে না। গাড়িতে উঠুন।’ বলে তুষি ড্রাইভারের পাশের আসনে উঠে বসে। তারপর বহু চেষ্টা করেও ওকে আমার থেকে আলাদা করতে পারিনি। একদিন বন্ধুরা একপ্রকার জোর করেই আমাদের বিয়ে দিয়ে দেয়। অবশ্য শুধু বন্ধুরা জোর করে বিয়ে দিয়েছে একথা পুরোপুরি ঠিক নয়, নিজের ইচ্ছাও যে একদমই ছিল না তা নয়। বন্ধুদের ইচ্ছা আর আমার ইচ্ছা মিলেমিশে একাকার হয়েই তুষি আমার জীবনের অংশ হয়ে যায়। সে এক বছর আগের কথা। ওর পরিবারের সবাই জানে। তাদের সাথে দু’একবার আমার কথাও হয়েছে। এবার দেশে আসার সময় তুষি আসতে চেয়েছিল। আমিই রাজি হইনি। তাকে বলেছিলাম, বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলে তাদের অনুমতি নিয়েই তোমাকে নিয়ে যাবো। তাদের না জানিয়ে যদি আগেই তোমাকে নিয়ে হাজির হই তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তুষি সেদিন বুঝেছিল আমার মনের অবস্থা। অবশ্য সে এও বলেছিল, ‘যদি শুনি দেশে যেয়ে তুমি কোন মেয়ের দিকে তাকিয়েছো, কিংবা বিয়ে করেছো তাহলে ভেবো না আমি অভিমান করে বিবাগী হবো। সোজা আন্তর্জাতিক আদালতে তোমার নামে মামলা ঠুকে দেবো। তখন কিন্তু তোমার দেশে যাওয়া আমাকে আটকাতে পারবে না।’ যদিও সে হাসতে হাসতে কথাটা বলেছিল। কিন্তু সে যে এমন কাজ করতে পারবে না তা অন্তত আমার বিশ্বাস হয় না। আমাকে ভালবাসার জন্যে- সারা জীবন আটকিয়ে রাখার জন্যে তার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব। বাংলাদেশে নিয়মমাফিক সবকিছু হয় না। বিশেষ করে সময়ের কাজ সবসময় নির্দিষ্ট সময়ে করা সম্ভব হয় না, পারিপার্শ্বিক অবস্থায়- আবহগত অবস্থায় অথবা ভৌগলিক অবস্থার কারণে। তা না হলে ভাঙাগেট রেলক্রসিং পার হয়ে কেন জ্যামে পড়তে হবে? সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যাণ্ড থেকে আমরা যখন গড়াই নামক বাস গাড়িতে উঠি তখন দুপুর একটা। পদ্মবিলা পৌঁছাতে দুটো পনের মিনিট থেকে আড়াইটা বাজবে এটা একপ্রকার নিশ্চিত যদি কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। কে জানতো, ভাঙাগেট পার হয়ে এভাবে ঐতিহাসিক জ্যামে পড়তে হবে! ঐতিহাসিক বলছি এই কারণে, আজ যে আমার বিয়ে! আর এদিনেই জ্যামে পড়তে হলো? এখানে কারো কিছু করার নেই। রাস্তার একপাশে রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এক লেন দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে বেশ কিছুদিন ধরে। ট্রাফিক সিস্টেম না থাকায় প্রথমদিন থেকেই বিপরীত দিকে গাড়ি আসতে দেখে অন্য পাশের গাড়ি নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকে নিজেদের দায়িত্বে। আজ দুপুরে দুই পাশ থেকে দুটি গাড়ি এক লেন দিয়ে ঢুকে পড়ায় বাঁধে বিপত্তি। দু’টি গাড়ি যাওয়া মানে পেছনে একের পর এক গাড়ি যেতেই থাকে। শেষে এমন এক অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়- দুইপাশের গাড়ি মুখোমুখি; কেউ আর কোনদিকে যেতে পারে না। ইতিমধ্যে দু’চার ঘন্টা পার হয়ে গেলেও সুরাহা হয়নি কিছুই। কোন কোন গাড়ি এদিক ওদিক যাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ছোট কাকুর তো গায়ে জ্বলনি উঠে গেছে। সে শুধু একা একা বকবক করতে থাকে। একবার সিট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকায় তো আরেকবার জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বাইরে দেখার চেষ্টা করে অবস্থাটা কী। প্রতি পাঁচ মিনিটে আমার মোবাইলে দু’বার তো ছোট কাকুর মোবাইলে তিনবার কল দিচ্ছেন বাবা। আমরা যেন তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরি। বরযাত্রীরা সবাই নাকি আমাদের জন্যে অপেক্ষায় আছে। ছোট কাকু তো একবার না পেরে বাবাকে ভিডিও কল করে আমাদের অবস্থানটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখিয়ে দেয়। তারপর থেকে অবশ্য বাবা একবারও কল করেনি। বাবা কল না দেয়ায় আমি মনে মনে খুশিই হই। সৃষ্টিকর্তা যদি সহায় থাকেন তাহলে এ যাত্রা হয়তো বেঁচে যাবো। না হলে সামনে যে কী আছে তা ভাবতেই গা শিউরে ওঠে আমার। জ্যাম কাটিয়ে আমরা যখন বসুন্দিয়া মোড়ে বাস থেকে নামি তখন সন্ধ্যা ছয়টা। তড়িঘড়ি একটা ভ্যানগাড়ি নিয়ে বাড়িতে পেঁছে যাই আরো পনের মিনিট পর। ভেবেছিলাম বাবা হয়তো বিয়ের তারিখটা পিছিয়ে দিয়েছেন, কিংবা যা কিছু একটা। অথচ বাড়ি পেঁছে আমিতো অবাক। বাড়ি ভর্তি লোকজন যত্রতত্রভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে; কেউ দাঁড়িয়ে- কেউ বসে, কেউবা দূরে তেঁতুল তলায় দাঁড়িয়ে বিড়ি টানছে। বাবা আমাদের দেখে এগিয়ে এসে বললেন, ‘আমি বুঝতে পারছি তোমাদের অবস্থাটা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct