সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বিধানসভায় জাতীয় সংগীত চলাকালীন বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে তা অবমাননা করার অভিযোগ আলো তৃণমূল। এ বিষয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিধানসভার অধ্যক্ষ ও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিধানসভার পক্ষ থেকে স্লোগান কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ডিসি সেন্ট্রাল সহ স্থানীয় হেয়ার স্ট্রীট থানাকে বিধানসভায় ডেকে আনা হয়।বুধবার ধর্মতলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আচমকা রাজ্য বিধানসভায় ঢুকে পড়েন শুভেন্দু অধিকারী। চিৎকার করে চোর চোর মমতার চোর স্লোগান দিতে থাকেন বিরোধীদল নেতা। একই সঙ্গে বলতে থাকেন চাকরি চোর , ডি এ চোর। তার সঙ্গে থাকা বিজেপির অন্যান্য বিধায়করা ও স্লোগান দিতে শুরু করে ‘চোর ধরো জেল ভরো’। নিমেষে বিধানসভা চত্বরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুভেন্দু অধিকারী যখন বিধানসভা চত্বরে স্লোগান দিচ্ছিলেন, সেই সময় বিধানসভার ভেতরে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেছিল তৃণমূল বিধায়করা রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কালো পোশাক পড়ে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এবার তৃণমূল বিধায়করা পাল্টা চোর চোর স্লোগান দিতে থাকেন শুভেন্দুকে দেখে। প্লাকাড নিয়ে মাটিতে বসে পড়েন শুভেন্দু। সেখান থেকে ত্রিশ ফুট দূরে বসেছিল তৃণমূল বিধায়করা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বুঝতে পেরে অধ্যক্ষ ডিসি সেন্ট্রালকে সেখানে প্রবেশ করার অনুমতি দেন।
লালবাজার থেকে স্পেশাল ফোর্স এসে দুই রাজনৈতিক দলের মাঝে ব্যারিকেড করে দাঁড়ায় । এদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করা হয় যে বেনজিরভাবে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভা চত্বরে তৃণমূল বিধায়কদের ওপর আক্রমণ করেছে। শুধু তাই নয় বিধানসভা চত্বরে ওই বিক্ষোভ চলাকালীন তৃণমূল বিধায়করা যখন জাতীয় সংগীত চাইছিলেন সেই সময় বিজেপি বিধায়করা অবমাননা করেছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তৃণমূলের রানা অভিযোগ তিনি গ্রহণ করেছেন। তদন্ত হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরবর্তী কড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। এদিকে আম্বেদকর মূর্তি পাদদেশ থেকে ধরনা শেষ করে বেড়ানোর সময় বিজেপির এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি বলেন বিধানসভায় ওরা অসভ্যতা করছে। স্পিকার কে ব্যবস্থা নিতে বলবো। আমাকে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ দেখিয়ে লাভ নেই। সারা জীবন লুট করেছে। গদ্দারদের আমাদের কেউ ভয় পায় না। কেউ কোন কর্মসূচি নিলে আমরা কেউ বাধা দিই না। বুধবার দুপুরে বিধানসভায় নাম না করে বিজেপিকে রাজনৈতিক নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই ধর্মতলায় সভা শেষ হতেই বিধানসভা চত্বরে ঢুকে শুভেন্দু, হই - হট্টগোল শুরু করে দেন। মঙ্গলবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কে অশোভন মন্তব্য করার অপরাধে শীতকালীন অধিবেশন থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct