আপনজন ডেস্ক: দেড় মাসের বেশি সময়ের টানা বিধ্বংসী ইসরায়েলি হামলার পর গাজা উপত্যকা গতকাল রবিবার তৃতীয় দিনের মতো শান্ত ছিল। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী গতকাল তৃতীয় দফা জিম্মি ও বন্দি মুক্তি হওয়ার কথা। অন্যদিকে গাজায় বোমারু বিমানের ধ্বংসলীলা আপাতত বন্ধ থাকলেও ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত অন্য অঞ্চল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের রক্তাক্ত অভিযান চলছে। জেনিন শহরসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে গতকাল।মূলত কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে শুক্রবার থেকে প্রথম দুই দিনে ২৬ নারী ও শিশু ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর বিনিময়ে ৭৮ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ত্রাণসংক্রান্ত চুক্তির ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে শনিবার জিম্মিমুক্তি বিলম্বিত করেছিল হামাস। যুদ্ধবিরতিতে জরুরি প্রয়োজনীয় জ্বালানি, চিকিৎসাসামগ্রী, খাদ্য সহায়তার ত্রাণ সংগ্রহ করছে গাজাবাসী।
মৃত্যু উপত্যকায় কিছুটা হলেও ফিরেছে প্রাণের স্পন্দন। গতকাল গাজার অনেক বাসিন্দাকে ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। গতকাল গাজায় এক লাখ ২৯ হাজার লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে বলে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া এদিন উত্তর গাজায় ত্রাণবাহী ৬১ ট্রাক গেছে।৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর গতকালই উত্তর গাজায় সর্বাধিকসংখ্যক ত্রাণের ট্রাক গেছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে সেনাসহ এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মিও করে হামাস। এর জবাবে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকই শিশু।চার দিন গেলে কী হবেএখন অনেকের মনে প্রশ্ন, আজ যুদ্ধবিরতির চতুর্থ দিনটি পেরনোর পর কী ঘটবে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। এটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নয়। ইসরায়েলে সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা মূল চুক্তির বাইরে প্রতি ১০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য একটি বাড়তি দিন যুদ্ধবিরতি দিতে পারে। হামাস এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। গাজায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত দুই শর বেশি জিম্মি ছিল। এটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হামাসের জন্য বাড়তি সুবিধা।ইসরায়েলের আশঙ্কা যুদ্ধবিরতি বাড়ালে তা হামাসকে আবার সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিতে পারে। একই সঙ্গে জিম্মিদের চলমান মুক্তিপ্রক্রিয়া সফল হলে নেতানিয়াহু সরকার আরো জিম্মির মুক্তির ব্যবস্থা করতে আলোচনার জন্য দেশবাসীর নতুন চাপের মুখে পড়তে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct