নিজস্ব প্রতিবেদক, অশোকনগর, আপনজন: রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া কালীঘাটের ‘কাকু’ বলে পরিচিত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার এই উত্তর ২৪ পরগনার এক রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে েএই মন্তব্র করলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। নওশাদ বলেন, সিসিক্যামেরা এবং নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা দরকার সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে। তার কন্ঠস্বর দিয়ে হয়তো কালীঘাট পৌঁছে যেতে পারে ইডি। তাই ওনার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে, বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। রাজবেড়িয়ায় আইএসএফ ভুরকুন্ডা অঞ্চল কমিটির উদ্যোগে সংবিধান দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত একটি রক্তদান শিবিরে নওশাদ সিদ্দিকী পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেন। নওশাদ বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের যে সম্পর্ক করা দরকার পুলিশকে দিয়ে যেভাবে রাজনীতি করণ করে ফেলেছে। মানুষ আর পুলিশের উপরে বিশ্বাস করছে না।প্রশাসন বা শাসক যেভাবে বিরোধীদের কন্ঠ রোধ করবার চেষ্টা করছে তারপরেও বলবো আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়।আইনের উর্ধ্বে কেউ নয় কেউ যদি অনৈতিক কাজ করে প্রশাসন আছে আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়।যারা আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন তাদেরকে আমরা কোনভাবেই সমর্থন করতে পারছি না তবে এই ধরনের ঘটনা এত কেন বেড়ে যাচ্ছে তার কারণ পুলিশকে দিয়ে আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। এক তৃণমূল নেত্রীর বাংলাদেশী নাগরিক প্রসঙ্গে মন্তব্য নিয়ে নওশাদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে এনআইএ দিয়ে তদন্ত করা হোক। তৃণমূল নেত্রী এবং যে তৃণমূল নেতার নাম বলা হচ্ছে তাদেরকে এনআইএ দিয়ে তদন্ত দরকার।
অন্যদিকে বিজেপির সমালোচনা করে নওশাদ বরেন, ভারতের সংবিধান ভুলুণ্ঠিত করছে দেশের শাসক গোষ্ঠী। তারা গোটা সংবিধানটা বাতিল করে দিতে পারলে খুশি হয়। কিন্তু বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রণীত এই সংবিধান পালটানো এত সহজ নয়। এর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। সেই প্রতিরোধের সামনের সারিতে থাকবে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। নওশাদ ক্ষোভের সাথে বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলি আক্রান্ত হচ্ছে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মতো এই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারও কম যায়না। কিন্তু তিনি এই সাংবিধানিক অধিকার হরণের জন্য সংবিধান সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকেই অন্যতম একটি কারণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জনগণের কাছে সংবিধান পড়ার আহ্বান করেন। বলেন, সকলের বাড়িতে সংবিধান রাখতে হবে। সংবিধানের অধিকারগুলি জানলে এবং সচেতনতা গড়ে উঠলেই শাসকগোষ্ঠী বিপাকে পড়বে বলে তিনি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস, উভয়ই বাইনারি রাজনীতির চেষ্টা করছে। রক্তদান শিবিরে আরো বক্তব্য রাখেন রাজ্য কমিটির সদস্য আইনজীবী জামির হোসেন, তিনি জীবন বাঁচাতে রক্তদানের গুরুত্ব এবং পাশাপাশি রক্তদাতার উপকার নিয়েও আলোচনা করেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলার সভাপতি তাপস ব্যানার্জি মহাশয় সহ অশোকনগর বিধানসভা এবং ভুরকুন্ডা অঞ্চলের নেতৃত্ব। এই রক্তদান শিবির অনুষ্ঠানে কমবেশি ২০৪ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন বলে জানান কর্মকর্তারা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct