আপনজন ডেস্ক: মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) অভিযোগ করেছে, চিনা কর্তৃপক্ষ দেশটিতে থাকা বেশ কয়েকটি মসজিদ বন্ধ এবং তা ভেঙে পুনর্নির্মাণ করছে। যা ইসলামের চর্চা বন্ধে একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টার অংশ।সংস্থাটির এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। এইচআরডাব্লিউর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনে ইসলাম ধর্মের অনুসারী প্রায় ২০ মিলিয়ন।তাদের বেশির ভাগই জিনজিয়াং, কিংহাই, গানসু ও নিংজিয়া এলাকায় বসবাস করে। প্রতিবেদনটি চিনের উত্তর-পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে কৌশলগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তবে বেইজিং এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মায়া ওয়াং বলেছেন, ‘চিন সরকারের মসজিদ বন্ধ, ধ্বংস এবং পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম দেশটিতে ইসলামের চর্চা বন্ধ করার একটি কৌশলগত প্রচেষ্টার অংশ।চিনে দুটি প্রধান মুসলিম জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। একটি হুইসরা তাং রাজবংশের সময় অষ্টম শতাব্দীতে চিনে আসা মুসলমানদের বংশধর। দ্বিতীয়টি হলো, উইঘুর। যাদের বেশির ভাগই জিনজিয়াংয়ে বসবাস করে।
এইচআরডাব্লিউ প্রতিবেদনে আরো জানিয়েছে, নিংজিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লিয়াওকিয়াও গ্রামের ছয়টির মধ্যে তিনটি মসজিদের গম্বুজ ও মিনার খুলে ফেলা হয়েছে। বাকি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। একটি স্যাটেলাইট ফুটেজে লিয়াওকিয়াও গ্রামে মসজিদ পুনর্নির্মাণ করতে দেখা গেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনের নেতা শি চিনপিংয়ের অধীনে কমিউনিস্ট পার্টি রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং চিনা সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মকে সারিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। ২০১৮ সালে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি একটি নথি প্রকাশ করে।যাতে মসজিদগুলোর নিয়ন্ত্রণ এবং একত্রীকরণের কথা উল্লেখ আছে। প্রদেশিক সরকারকে এই জাতীয় কাঠামো (মসজিদ) আরো বেশি করে ভেঙে ফেলা এবং কম নির্মাণের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। নথিতে মসজিদ নির্মাণ, বিন্যাস এবং তহবিল কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা আবশ্যক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে চিনা সরকার দাবি করেছে, মসজিদের একত্রীকরণ প্রায়ই ঘটে। এটা ঘটে যখন গ্রামবাসীরা অন্য স্থানে চলে যায় বা একত্র হয়। যা মুসলমানদের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হুই কর্মী মা জুর মতে, মসজিদ থেকে বাহ্যিক উপাদানগুলো সরানোর পর, স্থানীয় সরকার নামাজ কায়েমের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা, যেমন অজুর স্থান এবং ইমামের মঞ্চগুলো সরিয়ে ফেলে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে মা জুকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘তখন মুসলমানরা মসজিদে যাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং তখন কর্তৃপক্ষ মসজিদগুলো বন্ধ করার অজুহাত দেখায়।’হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার পরিচালক ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, সারা বিশ্বের আরব ও মুসলিম নেতাদের উচিত এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct