আপনজন ডেস্ক: ফসলে ব্যবহৃত কীটনাশক ও ফল-সবজিসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে ছিটানো রাসায়নিকের কারণে বিশ্বব্যাপী পুরুষের শরীরে শুক্রাণুর সংখ্যা বা স্পার্ম রেট আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, গত ৫ দশকের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে।বুধবার ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সে জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির কলেজ অব পাবলিক হেলথের ডিন ও লেখক অধ্যাপক মেলিসা পেরির গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।অধ্যাপক পেরি বলেন, ৫০ বছর ধরে সারাবিশ্বে শুক্রাণুর ঘনত্ব প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এর পেছনে দায়ী প্রধান দুটি কারণ (অপরাধী) আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে দুটি সাধারণ কীটনাশক। অর্গানোফসফেটস এবং এন-মিথাইল কার্বামেট- বিশ্বব্যাপী পুরুষের শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে ফেলার পেছনে দায়ী।তিনি আরো বলেন, বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত যৌগগুলোর মধ্যে একটি অর্গানোফসফেট কীটনাশকের প্রধান উপাদান স্নায়ু গ্যাস (নার্ভ গ্যাস), হার্বিসাইডসহ প্লাস্টিক এবং দ্রাবক তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। আমরা যে ফসল খাই সেগুলোতে কীটনাশক ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বাড়ি এবং ভবনের শোভা বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে এসব যৌগ ব্যবহার করা হয়।এর আগে, ২০১৭ সালে একাধিক চিকিৎসক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সারাবিশ্বে পুরুষদের শরীরে যে হারে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এই হার অব্যাহত থাকলে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে মানবজাতি।প্রায় ২০০টি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, ৪০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট। তখন উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের পুরুষদের ওপর করা হয়েছিল এসব গবেষণা।তথ্য সংগ্রহের এই গবেষণা দলের প্রধান ড. হ্যাগাই লেভিন জানান, ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা নিয়ে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন। সেই তুলনামূলক গবেষণাটি করা হয় ১৯৭৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। এই সময়কালে করা ১৮৫টি গবেষণার তথ্যের ভিত্তিতে নতুন এ গবেষণা করে ড. লেভিনের দল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct