আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার গণকবর থেকে শতাধিক মরদেহ তুলে নিয়ে গেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।শনিবার (১৮ নভেম্বর) গাজার এক সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের কর্মকর্তা ইসমাইল আল–থাওয়াবতা বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা আল শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণের গণকবর থেকে শুক্রবার শতাধিক মরদেহ তুলে নিয়ে গেছে। দাফনের জায়গা না থাকায় এভাবে গণকবর দেওয়া হয়েছিল।’ইসমাইল আল-থাওয়াবতা আরো জানান, গত কয়েক দিনে হাসপাতালে আরো অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এসব মরদেহ হাসপাতালের ভেতরে কবর দিতে চেয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতাল দখল করে থাকা ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মরদেহ দাফন করতে বাধা দেন। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে লাশের স্তূপ জমে গিয়েছিল। এসব মরদেহ দাফন করার জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। এমন এক পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই দেড় শতাধিক মরদেহ গণকবর দেন।ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে থাকা ওই গণকবর খুঁড়ে ফেলেন। এরপর সেখান থেকে শতাধিক মরদেহ বের করে নিয়ে যান।’
গত মঙ্গলবার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৭৯ জনকে হাসপাতালটির চত্বরে গণকবর দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এছাড়া হাসপাতালে জ্বালানি শেষ হওয়ার পর চিকিৎসাসেবা না পেয়ে মারা যাওয়া ৭ শিশুসহ ৩৬ জনকেও গণকবর দেওয়া হয়েছে।’গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে আল শিফা হাসপাতালে অভিযান শুরু করেন ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালে হামাসের আস্তানা আছে দাবি করে এ অভিযান চালানো হলেও হামাস তা অস্বীকার করে আসছে।এরপর, গত ১৫ নভেম্বর আল শিফা হাসপাতালের ভেতরে হামলা চালায় ইসরায়েল।আবু সালমিয়া বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী কাউকে ঢুকতে বা বের হতে না দেয়ায় হাসপাতালটি একটি ‘বড় কারাগার’ এবং ‘গণকবর’ হয়ে উঠেছে।তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছুই নেই। জ্বালানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পানি নেই। প্রতিমুহূর্তে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গত তিন দিন ধরে হাসপাতালটি অবরোধ করে রাখা হয়েছে।’এরপর, শনিবার (১৮ নভেম্বর) হাসপাতালটি এক ঘণ্টার মধ্যে খালি করার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সেনারা। তাদের এই নির্দেশের পরই ভয়ে ও আতঙ্কে হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করে আশ্রিত মানুষগুলো।আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে আল শিফা হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আল্টিমেটামের পর এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালটি এখন প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। ‘সাদা পতাকা’ হাতে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করছেন বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct