আপনজন ডেস্ক: ব্যাট হাতে স্বপ্নের মতো এক বিশ্বকাপ কাটিয়েছেন বিরাট কোহলি। প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান পেয়েছেন। প্যাট কামিন্সের বলে বোল্ড হওয়ার আগে আজ ফাইনালেও দলের বিপর্যয়ের মুখে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩ বলে ৫৪ রান। ফাইনালসহ ১১ ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচ ছাড়া বাকি সব কটিতে কোহলি করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব রান। যেখানে আছে তিনটি শতক ও ছয়টি অর্ধশতক। এই ১১ ম্যাচে ৯৫.৬২ গড় ও ৯০.৩১ স্ট্রাইক রেটে কোহলি করেছেন ৭৬৫ রান, যা বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ রান। এর মধ্যে ফাইনালে অর্ধশতক করে নতুন একটি মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন কোহলি। প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০–এর বেশি রান করেছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। যেখানে কোহলির সঙ্গে আছে আরও ছয় ব্যাটসম্যান। তবে এই দুই ইনিংসের মধ্যে কমপক্ষে একটি শতক বিবেচনা করলে তালিকায় কোহলিসহ আছেন তিনজন। বাকি দুজন হলেন শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা ও স্টিভেন স্মিথ। এর মধ্যে কেবল শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ডি সিলভাই ফাইনালে শতক পেয়েছেন। কোহলি এবং স্মিথ শতক পেয়েছেন সেমিফাইনালে। তবে ডি সিলভা ও স্মিথ দুজনই পেয়েছিলেন শিরোপার স্বাদ। কোহলিও পাবেন কি না, সেটি জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের পঞ্চাশের বেশি রানের কীর্তি প্রথম দেখা গিয়েছিল ১৯৭৯ বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডের হয়ে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০–এর বেশি রান করেছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক মাইক বেয়ার্লি। ফাইনালে তিনি খেলেছিলেন ১৩০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। কিন্তু এই কীর্তি গড়েও লাভ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে শিরোপাবঞ্চিত থাকতে হয়েছিল বেয়ার্লিকে। দ্বিতীয়বার এই কীর্তি গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ডেভিড বুন। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ের পথে দুই ইনিংসেই অর্ধশতক রানের ইনিংস খেলেছিলেন বুন। ১৯৯২ সালে পরের বিশ্বকাপেও দেখা গেছে একই কীর্তি। সেবার সেমিফাইনাল ও ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জাভেদ মিয়াঁদাদ। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ে দুটি ইনিংসই রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ে অসামান্য ভূমিকা রাখা ডি সিলভা সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৪৭ বলে ৬৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন ডি সিলভা। আর ফাইনালে বিপর্যয়ের মুখে ডি সিলভা খেলেন ১২৪ বলে ১০৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তাঁর এই ইনিংসটিই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের স্বাদ দেয় লঙ্কানদের। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে ডি সিলভার কীর্তির পর টানা চার বিশ্বকাপে আর এই কীর্তি দেখা যায়নি। অর্থাৎ একই ব্যাটসম্যান হিসেবে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০–এর বেশি রান করতে পারেননি কেউই। তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে এসে একই সঙ্গে দুই ব্যাটসম্যান গড়েছেন এই কীর্তি। স্মিথের কথা তো আগেই বলা হয়েছে, নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান গ্র্যান্ড এলিয়টও পেয়েছিলেন এই মাইলফলকের স্পর্শ। যদিও শেষ হাসি হাসা হয়নি তাঁর। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপে আর কেউ গড়তে পারেননি এই কীর্তি। এবার করে দেখিয়েছেন কোহলি। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতকের অর্ধশতক গড়া কোহলি খেলেছিলেন ১১৭ রানের ইনিংস।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct