সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: একের পর এক ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। এবার বিহার ও অন্ধপ্রদেশের বিরুদ্ধে কোচবিহার ট্রফির ১৭ জনের অনূর্ধ্ব-১৯ বাংলা ক্রিকেট দলের হয়ে পাটনায় খেলতে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী লালগোলার ভূমিপুত্র জাহির আহমেদ।তবে এতদূর আসার গল্পটা সহজ ছিলো না। মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী লালগোলার ঝাউবোনা গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক আব্দুল তাহিরের পুত্র জাহির আহমেদ। দরিদ্র পরিবারে খরচ কমাতে ছোটবেলায় তাকে মামার বাড়ি লালগোলার গাবতলা গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই বড়ো হয়ে ওঠা, ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ জন্মানো। লালগোলা এম এন একাডেমী স্কুলে পড়াশোনার পর বর্তমানে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র জাহির। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অতটা না থাকলেও ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা তার ছোট থেকেই। মামার বাড়িতে থেকেই স্থানীয় নেতাজি কুঞ্জ পরিচালিত দেবীরানি রায় ক্রিকেট কোচিংয়ে অংশগ্রহণ করে এবং ক্লাব কর্তা সুভরঞ্জন রায়ের তত্ত্বাবধানে ক্রিকেট শিখতে থাকে সে। ২০১৮ মরশুমে অনূর্ধ্ব-১৪ মুর্শিদাবাদ দলের অধিনায়ক ছিলো জাহির। ২০১৯ সালে পরপর তিনটি ম্যাচে তিনটি সেঞ্চুরি করে অনূর্ধ্ব-১৫ বাংলা দলের বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয় সে। ২০২১ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বাংলা দলের হয়ে খেলার জন্য ডাক পায় জাহির। তার মধ্যেই স্থানীয় ক্রিকেটে একেরপর এক ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে রেকর্ড গড়ে জাহির। ২০২৩ -এর সেপ্টেম্বর মাসে অনূর্ধ্ব-১৯ বাংলা ক্রিকেট দলে পাকাপোক্ত ভাবে জায়গা দখল করে জাহির আহমেদ। নভেম্বরে বাংলার হয়ে বিহার ও অন্ধপ্রদেশের বিরুদ্ধে কোচবিহার ট্রফি খেলতে পাটনায় গিয়েছে সে। শুধু ব্যাটিং নয়, বোলিংয়েও দুর্দান্ত পারফরমেন্স তার। ১৩০ কিলোমিটারের অধিক গতিবেগের রেকর্ড গড়েছে জাহির। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি বোলার জাহির বাংলার দলে জায়গা করে নেওয়ায় খুশিতে মাতোয়ারা সীমান্তবর্তী লালগোলা সহ মুর্শিদাবাদ জেলাবাসী।তবে যাদের কারণে ক্রিকেটের মাঠ ছাড়তে পারেনি জাহির, সেই উজ্জ্বল মিত্র, মোশারফ হোসেন, সৌরভ রায়, অরিন্দম বিশ্বাসের নজর এখন কোচবিহার ট্রফির স্কোর বোর্ডের দিকে। সমগ্র বাংলা যেন বলছে ‘জাহির তুমি পারবেই’।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct