মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: দেশের জন্য সারাটি জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি। তিনি ভগৎ সিং এর সঙ্গী হয়ে দেশকে স্বাধীন করবো বলে ইংরাজ আমলে পার্লামেন্টে বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। অবিভক্ত বর্ধমানের খণ্ডঘোষের ওয়ারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করা ওই বিপ্লবীর নাম বটুকেশ্বর দত্ত। যে অপরাধের কারণে ভগত সিংয়ের ফাঁসি হয়েছিল সেই একই অপরাধে কম বয়স থাকার কারণে আন্দামানের জেলে দ্বীপান্তরিত হতে হয় বটুকেশ্বর দত্তকে। মৃত্যুর পরও তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে সময়িত করা হয় শহীদে আজম বীর বিপ্লবী ভগত সিংয়ের সমাধির পাশে পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে। ভারতবর্ষের ইতিহাসে প্রথম তার মৃত্যুর পর তিন দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ছিল বটুকেশ্বর দত্তকে সম্মাননা জানানোর জন্য। বর্তমান প্রজন্ম ভুলে গেছে তাকে। স্বাধীনতা আন্দোলনের চরম সময়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯১০ সালে। মৃত্যু হয় ১৯৬৫ সালে। স্বাধীন হওয়ার পর জীবন জীবিকার জন্য তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। প্রচন্ড আর্থিক কষ্টের মধ্যে তার জীবন চলে। ভগৎ সিং এর মা এর কোলে মাথা রেখে মৃত্যু বরণ করেন।
ভগৎ সিং এর সঙ্গী হয়ে পার্লামেন্টে বোমা ফেলার সঙ্গে সময় মাওলানা হসরত মোহানির সৃষ্টি করা স্বাধীনতা আন্দোলনের স্লোগান ইনক্লাব জিন্দাবাদ ধনী প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেন এবং ইংরেজদের হাতে বন্দি হন। এই বিপ্লবী খণ্ডঘোষের নিজ জন্মভূমি ওয়ারী গ্রামে ভগৎ সিংকে নিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই আত্মগোপন করা জায়গা বর্তমানে হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় কয়েক কোটি টাকা খরচা করে মিউজিয়ামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যতম পর্যটনের জায়গা হয়েছে বটুকেশ্বর দত্তের জন্মভূমি। বর্তমানে বটুকেস্বর দত্ত ওয়েলফেয়ার কমিটি জন্মভূমিকে পর্যটনের জায়গা আনার জন্য চেষ্টা করছেন এই কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা মধুসূদন চন্দ্র। ১৮ নভেম্বর আজ তার জন্মভূমিতে শ্রদ্ধার্গ জানাচ্ছেন অনেকেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর তত্ত্বাবধানে বিধায়ক নবীন চন্দ্র বাগ , বি অভিক কুমার ব্যানার্জি, খণ্ডঘোষ ওসি সুব্রত বেরা ,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মীর সফিকুলের উদ্যোগে শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান । প্রতিবছর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান সংঘটিত হয়। বিপ্লবীর জীবনি নিয়ে আলাপ আলোচনা করা হয় এবং অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী বংশধররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct