আপনজন ডেস্ক: বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসায় নিহতদের পরিবার প্রতি দু লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই সমস্ত নিহতদের পরিবার প্রতি একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাশ করিয়ে নিলেন। সংবাদ সংস্থা সূত্র জানাচ্ছে, শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়অ হয়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের প্রতিটি পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার একটি প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হন। তবে অনানুষ্ঠানিক হিসাব অনুযায়ী মোট হতাহতের সংখ্যা ৫৫ জন।এদিন রাজ্য সরকার জানিয়েছে, রাজ্যে সরকারি মালিকানাধীন জমি সিল করার ক্ষেত্রে অনিয়মের ঘটনা তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই অর্পিত জমি নিয়ে অনিয়মনিয়ে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগের একাংশের জড়িত থাকার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওই বিভাগের কিছু আধিকারিক বেআইনিভাবে কিছু অব্যবহৃত জমি বেসরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করছেন এবং যাঁরা যথাযথ তল্লাশি না করেই সেই জমি কিনছেন, তাঁরা পরবর্তী পর্যায়ে সমস্যায় পড়ছেন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী একটি সচেতনতা মূলক অভিযান শুরু করার উপরও জোর দিয়েছিলেন যাতে জমি ক্রয়কারী ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে অসুবিধা এড়াতে তাদের ক্রয় করা জমির ব্যাকগ্রাউন্ড রেকর্ডগুলি যথাযথভাবে অনুসন্ধান করতে পারেন। হিংসা, খুনোখুনি, রক্তপাত। চলতি বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বলি হন বহু মানুষ। যুযুধান রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি হামলার শিকার হয়েছেন ভোটকর্মীরাও। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ ভোটকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিহতদের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেওয়া হয়। গত ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনী হিংসায় নিহতদের পরিবারদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। গত ১২ জুলাই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান তিনি। সেসময় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘নিহতদের পরিবারকে আমরা দু’লক্ষ টাকা করে দেব৷ হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে।‘ তিমধ্যে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর এবার চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে সিলমোহর দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। শুক্রবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেখানেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টি পাশ হয় বলে নবান্ন সূত্রের খবর। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই নিহতর সংখ্যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি তুলেছিলেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৫ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ১৯ জন মানুষের মৃত্যুর কথা বলেছেন। তাই সকলকে চাকরি এবং আর্থিক সাহায্য দিতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct