আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই সাড়ে ৭ হাজার।বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এমন অবস্থায় গাজার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে মেনে নিতে পারে, এমন প্রশ্নই তুলেছেন রেডক্রস ফেডারেশনের প্রধান। একইসঙ্গে গাজায় চলমান যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।শনিবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান লড়াই অবশ্যই ‘বন্ধ করতে হবে’ বলে শনিবার জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি)-এর প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সেস্কো রোকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে! গাজার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে মেনে নিতে পারে? আল-কুদস হাসপাতালে ইনকিউবেটরে থাকা শিশুরা এবং আইসিইউতে থাকা রোগীরা জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।’রোকা বলেছেন, গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার দিতে হবে এবং ‘জ্বালানিসহ অন্যান্য সাহায্য গাজার উত্তরাঞ্চলেও পৌঁছাতে হবে।’উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।এছাড়া গাজা উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালের জেনারেটর ব্যবস্থা। যে কারণে এই হাসপাতালে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে রোগীরা। এমনকি জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ইনকিউবেটরে থাকা কয়েক ডজন শিশু মৃত্যুর প্রহর গুনছে।ফিলিস্তিনে রেড ক্রিসেন্টের প্রধান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের গাজা থেকে উৎখাত করার জন্য সেখানকার হাসপাতালগুলোকে নির্বিচারে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি সতর্ক করে বলেছেন: ‘গাজায় কোনও জায়গাই নিরাপদ নয় এবং সেখানে কেউই নিরাপদে নেই।’১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে টেড্রোস বলেন, ‘গাজার হাসপাতালের করিডোর পর্যন্ত আহত, অসুস্থ, মৃত ব্যক্তিদের ভিড়ে ভরে গেছে। মর্গ উপচে পড়ছে। অ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ হাসপাতালে আশ্রয় নিচ্ছেন।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct