আপনজন ডেস্ক: দেরিতে হলেও অবশেষে বোধোদয় হল ভারত সরকারের। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের নিন্দা জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত। পূর্ব জেরুজালেম সহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং অধিকৃত সিরিয়ার গোলানে বসতি স্থাপনের কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার অনুমোদিত হয়। যে সাতটি দেশ এর বিরোধিতা করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে আমেরিকা ও কানাডা। আঠারোটি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ‘তাৎক্ষণিক মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘের একটি প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকার কয়েক সপ্তাহ পর এই ঘটনা ঘটল।গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২০০ জনেরও বেশি জিম্মি হয়।পূর্ববর্তী ভোটে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সরকারের একটি সূত্র জানায়, ভারত গাজায় উদ্ভূত মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে এটিও বিশ্বাস করে যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনও সমতা হতে পারে না। সংবাদমাধ্যম সূত্র জানিয়েছে,রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশনে ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার সুস্পষ্ট নিন্দা করা হয়নি। মূল প্রস্তাবে ভোটাভুটির আগে এই দিকটি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি সংশোধনী উত্থাপন করা হয়েছিল।ভারত এই সংশোধনীর পক্ষে ভোট দিয়েছে এবং এটি পক্ষে ৮৮ টি ভোট পেয়েছে তবে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সূত্রটি ভারতীয় প্রতিনিধির মনোভাব তুলে ধরে আরও বলেছে, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমস্ত উপাদান প্রস্তাবের চূড়ান্ত পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় আমরা এটি গ্রহণের বিষয়ে ভোটদানে বিরত ছিলাম।সরকারি সূত্রের খবর, এই ইস্যুতে নয়া দিল্লির ‘অবিচল ও ধারাবাহিক অবস্থান’-এর কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ভোটের ব্যাখ্যা এই বিষয়টিকে ব্যাপকভাবে ও সামগ্রিকভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছে।নয়া দিল্লির ভোটের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি যোজনা প্যাটেল তখন বলেন, “জিম্মিদের প্রতিও আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আমরা অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।তিনি বলেন, ‘এই মানবিক সংকট মোকাবেলা করতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উত্তেজনা প্রশমন প্রচেষ্টা এবং গাজার জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা প্রদানকে স্বাগত জানাই। ভারতও এই প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে।তিনি বলেন, ভারত সবসময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করেছে, যার ফলে একটি সার্বভৌম, স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে, যা ইসরায়েলের সাথে পাশাপাশি সুরক্ষিত ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে বসবাস করবে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইসরায়েলে হামলাকে হামাসের ‘সন্ত্রাসী’ পদক্ষেপ বলেছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct